ডেস্ক নিউজ আদালত বার্তা :৪ মে ২০২৩।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীর আলমের করা আপিল নামঞ্জুর হয়েছে। ফলে বাতিলই থাকছে জাহাঙ্গীরের প্রার্থিতা। ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার তার ওই আপিলের শুনানি হয়।
বাতিল হওয়া মনোনয়ন পত্রের বৈধতা ফিরে পাওয়ার আশায় আপিল করলেও রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশ বহাল রেখেছে আপিল কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৪ মে) বিকেলে আপিলের শুনানি শেষে আদেশ দিয়েছেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম।
রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রতিনিধি ও শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ নির্বাচন কর্মকর্তা মঞ্জুর হোসেন খান গণমাধ্যমকে আপিল কর্তৃপক্ষের আদেশের কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার বাছাইয়ে বাদ পড়া মোট ৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করেন। তাদের মধ্যে আলোচিত মেয়র প্রার্থী, গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র অ্যাড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, একজন সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও ৫ জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন।
আপিলের শুনানিতে দুজন আইনজীবীসহ জাহাঙ্গীর আলম নিজে উপস্থিত ছিলেন। শুনানিতে তারা পুন:তফসিলিকরণের জন্য টাকা জমা দেয়া এবং জামিনদার খেলাপি হয় না বলে দাবি করেন। কিন্তু শুনানিতে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি জানান, আপিলকারীগণ ব্যাংকের আইন অনুযায়ী এখনো ঋণ খেলাপি। জাহাঙ্গীর আলম যে প্রতিষ্ঠানের ঋণের জামিনদার সে ঋণ এখনো পুন: তফসিলিকরণ হয়নি। এসময় ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্য প্রার্থীগণ মনোনয়ন জমাদানের সময় ঋণ খেলাপি ছিলেন। তাই তারা পরে টাকা জমা দিলেও তারা খেলাপি।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আপীলকারী কর্তৃপক্ষ ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমসহ ঋণ খেলাপীর কারণে মনোনয়ন বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তার দেয়া আদেশ বহাল রাখেন।
এ সময় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম কাউন্সিলর পদে একজন প্রার্থীর টাকা জমার রশিদে কোড নম্বর ভুল থাকায় বাতিল হওয়া মনোনয়নটি বৈধ ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, বাছাইকালে একটি খেলাপি ঋণ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের ঋণের জামিনদার হওয়ার কারণে জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল করেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। জাহাঙ্গীর আলমের উপস্থিতিতে ওই কর্মকর্তা এই আদেশ দেন। তবে তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন ফরম বাছাইকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, জাহাঙ্গীর আলম মেয়র পদে এই নির্বাচনে যে সমস্ত কাগজপত্র দাখিল করেছেন, তার সবকিছু সঠিক পাওয়া গেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি যে প্রতিষ্ঠানের জন্য জামিনদার হয়েছিলেন, সেই প্রতিষ্ঠানটি ঋণখেলাপি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নৌকার টিকিটে মেয়র নির্বাচিত হন জাহাঙ্গীর আলম। দুই বছর আগে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। এর পর মেয়র পদও হারান। তবে গত ১ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরকে দলে ফিরিয়ে নেয় আওয়ামী লীগ। এবার দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন তিনি।