একবার কি চিন্তা করে দেখেছেন কৃএিম বুদ্ধিমত্তা ও মানুষের মধ্যে প্রতিযোগিতা কেন দিন দিন বাড়ছে?
এডভোকেট মোহাম্মদ এনামুল হক আদালত বার্তা ঃ ৭ অক্টোবর ২০২৩।
মানুষ একটি লিভিং-অর্গান। সুতরাং মানুষের মধ্যে সুখ, দুঃখ, আনন্দ, বেদনা, হতাশা, নৈরাশ্য, প্রতিশোধ পরায়ণতা, ঘৃণা, ভালোবাসা প্রভৃতি কাজ করে। ফলে, অনেক সময় সিদ্ধান্ত অনুমানে মানুষ বিচার-বিশ্লেষণে তার ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মতাদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হয়। কিন্তু একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন মেশিন সবকিছুর ঊর্ধ্বে থাকবে বলে, তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা, বিশ্লেষণী দক্ষতা এবং ফলাফল বের করে ক্ষমতা অনেকটা তত্ত্ব, তথ্য ও বাস্তবসম্মত হবে।
তাছাড়া মানুষ কাজ করতে করতে এক সময় ক্লান্ত হয়ে যায়। মানুষের বিরাম ও বিশ্রামের প্রয়োজন। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মেশিন ক্লান্ত হবে না। ফলে, তার বিরাম ও বিশ্রামের কোনো প্রয়োজন নেই। তাছাড়া, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মেশিন যেকোনো কিছু মানুষের চেয়ে সহজে এবং দ্রুত শিখতে পারবে।
তার স্মৃতিশক্তি মানুষের চেয়ে অনেক বেশি হবে কারণ তার মধ্যে তথ্যভাণ্ডার আপলোড করে দেওয়া হবে। যেহেতু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি একটি সুচিন্তিত কম্পিউটার সিস্টেমের মাধ্যমে অনেক চিন্তা-ভাবনা এবং গবেষণার ফসল হিসেবে তৈরি করা হবে, তথ্য বিশ্লেষণ এবং সিদ্ধান্ত অনুমানে এর নির্ভুলতার সম্ভাবনা মানুষের চেয়ে নিঃসন্দেহে অনেক বেশি হবে।
এই পৃথিবীর বর্তমান জনসংখ্যা হলো ৮০০ কোটি৷ তাদেরকে সঠিকভাবে সেবা দিতে, তাদের জীবনের মান উন্নত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকল্প নেই৷ আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তাদের জন্মের পর থেকেই এর ভেতর দিয়ে বেড়ে উঠবে৷ তারা ভিন্ন ধরনের একটা জীবন যাপন করবে, যা এখানে লিখলে সায়েন্স ফিকশন মনে হতে পারে! আমরা আছি সেই দ্রুত পরিবর্তনের পথ চলার যাত্রী হয়ে!
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে কয়েকজন বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞের অভিমত এখানে তুলে ধরা হল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে একবিংশ শতাব্দীর সাড়া জাগানো বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং বলেছেন, এরা এক সময়ে আমাদের অতিক্রম করে যাবে। এর ফলে মানবজাতির বিলুপ্তি ঘটতে পারে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কীভাবে এর স্রষ্টাকে অতিক্রম করতে পারে এবং তা মানবজাতির জন্য হুমকি বয়ে আনতে পারে, এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়ন কৌশল এমন স্তরে পৌঁছবে, যাতে মানুষের সাহায্য ছাড়াই এরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজেদের উন্নতি ঘটাতে পারবে। আর যদি এমনটি ঘটে, তাহলে আমাদের বুদ্ধিমত্তার বিস্ফোরণের সম্মুখীন হতে হবে; যার ফলে যান্ত্রিক বুদ্ধি আমাদের অতিক্রম করবে। Space X-এর প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নকে ‘Summoning the Demon’ অর্থাৎ দৈত্যকে ডেকে আনার শামিল আখ্যায়িত করে এটাকে মানবজাতির জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছেন।
আমরা প্রযুক্তির এই ক্রম উৎকর্ষতাকে স্বাগত জানাই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির উদ্ভাবনে অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করছেন এই দুশ্চিন্তায় যে, মেশিন যদি মানুষের জায়গা নিয়ে নেয়, তাহলে মানুষ টিকে থাকবে কীভাবে? চাকরির বাজারে মানুষের অনিশ্চয়তা হয়তো আরও বেড়ে যাবে!