দেশের সর্ব উত্তরের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় ভোরবেলা কুয়াশা এবং শিশিরবিন্দু দেখে শীতকাল মনে হলেও এখন শরৎকাল (আশ্বিন মাস)। ঘন কুয়াশাই শীতের আগমনী বার্তা দিচ্ছে উত্তরের এ অঞ্চলে।
শিশিরবিন্দু ঝরছে সবুজ ধানের ডগায় ও চা-গাছের পাতায় পাতায় শিশির ফোঁটা ভোরের আলোয় চকচক করছে। সেই শিশির ঝরা ঘাস উপেক্ষা করে চা-চাষিদের যেতে দেখা যায় চায়ের সবুজ খেতে।
গতকাল শনিবার ভোরে কুয়াশাছন্ন এ উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা বিভিন্ন জায়গায় এমন চিত্র দেখা যায়। তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ২৬.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হলেও ধীরে ধীরে তা কমে আসছে। শরৎকালের মাঝামাঝিতেই এ অঞ্চলে ভোরে ঘন কুয়াশা, দিনে গরম রাতে শীত, বিরূপ আবহাওয়া বলছেন আবহাওয়া সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়রা জানায়, উত্তরের এই অঞ্চলে হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘা সন্নিকটে হওয়ায় এ অঞ্চলে শীতের আগমন ঘটে অন্যান্য জেলার আগেই। পর্বতমালার প্রবাহমান হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাওয়ায় আগেই শীত অনুভূত হয় এ এলাকায়।
আবহাওয়াবিদদের মতে, আশ্বিন মাসে মৌসুমি বায়ু কম সক্রিয় থাকায় এবং উত্তরীয় বায়ুর কিছুটা প্রভাব থাকায় শেষ রাতে শীত নেমে এলে ঠাণ্ডা অনুভূত হয়। বিশেষ করে মৌসুমি বায়ু যখন বাংলাদেশের ওপর আর সক্রিয় থাকবে না, তখন হালকা ধরনের শীত পড়বে।
সকালে স্থানীয় আধিবাসিরা জানান, ভোর থেকেই ঘন কুয়াশা দেখতেছি। তবে শীত নেই বললেই চলে। মনে হচ্ছে শীত এবার তাড়াতাড়ি নামবে ও শীতও বেশি হবে। দিনের বেলায় গরম বেশি হওয়ার কারণে কাজে কামে একটু সমস্যা হচ্ছে।
পরিবেশকর্মী মাহমুদুল ইসলাম মামুন জানান, উত্তরে আশ্বিনেই পৌষের কুয়াশা, এ যেন জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াল অশনিসংকেত! তবু মানুষ পরিমিতিবোধে নেই, সবুজায়ন সৃজনে আগ্রহ নেই। তাই সবাইকে পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে ভাবতে হবে, সচেতন হতে হবে। আর যেহেতু উত্তরাঞ্চল হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত। তাই এখানে শীতের আগমন আগেই ঘটে। এ কুয়াশায় বোঝা যাচ্ছে শীত পড়তে যাচ্ছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেল শাহ জানান, গত তিন দিন থেকে সকালে হঠাৎই চারপাশ কুয়াশায় ঢেকে যায়। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা দেখা গেছে।গতকাল (শনিবার) ভোর ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন দিন যত যাবে তাপমাত্রা তত কমতে শুরু করবে।