কলকাতা ভ্রমনে গেলে এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে না গেলে ভ্রমনের যেনো অপূর্নতা থেকে যায়।
এডভোকেট মোহাম্মদ এনামুল হক, আদালত বার্তাঃ২ জুন ২০২৪
কলকাতা ভ্রমনে গেলে এমন কিছু জায়গা রয়েছে।যেখানে না গেলে ভ্রমনের যেনো অপূর্নতা থেকে যায়।এই ধরুন যেমন,হাওড়া সেতু,ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল,কলকাতা জাদুঘর, কফি হাউস,ইডেন গার্ডেন,—
হাওড়া ব্রীজ:-
আজ থেকে ৮১ বছর আগে নির্মিত বিস্ময়কর ১৫০০ ফুট দূরত্বের স্থাপনা। ৮২মিটার উচ্চতা,৭১ফুট প্রস্থ,৭০৫ ফুট দৈর্ঘের ওয়েস্ট বেঙ্গলের হাওড়া সেতু।যা সকল মানুষের কাছে কলকাতার পিলার বিহীন সেতু হিসেবে পরিচিত।
কলকাতার প্রবেশাদার হুগলী( গঙ্গা-পদ্মা)নদীর উপর অবস্থিত।সৌন্দর্যের মহিমায় উদ্বেলিত এই ব্রীজটি যেকোনো পর্যটকের মন কেড়ে নেয়।রাতে বিভিন্ন আলোয় আলোকিত করে ভ্রমনপ্রিয় মানুষের হৃদয়কে আরো আনন্দিত ও আকর্ষনীয় করে তোলে।
ভ্রমণপ্রিয় মানুষের কাছে এটি এক বিস্ময়কর সৃষ্টি।
কলকাতা কেউ যদি ভ্রমণে যায় এটা তার গুরুত্বপূর্ণ পছন্দের ও আকর্ষনীয় স্থানের একটি। সেতুটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে রবীন্দ্রসেতু নামে পরিবর্তিত হয়েছে। বিট্রিশ স্থাপত্যের মধ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।এর পাশেই রয়েছে বিখ্যাত হাওড়া রেলস্টেশন। বিশাল বড় প্লাটফর্ম সংবলিত। আপনি এখান থেকে ভারতের যেকোনো স্থানে ট্রেনযোগে পৌঁছাতে পারবেন।
কলকাতা জাদুঘর :-
ভারতের বৃহত্তম জাদুঘর হলো কলকাতা জাদুঘর। ১৮১৪ সালে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বেঙ্গল এই জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করে। জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা কিউরেটর ছিলেন ড্যানিশ বোটানিস্ট ড. নাথানিয়েল ওয়ালিচ। কলকাতা জাদুঘর একটি সাংস্কৃতিক ও বিজ্ঞান জাদুঘর। ছয়টি বিভাগ নিয়ে বর্তমান জাদুঘরটি স্থাপত্যে শিল্পের নিদর্শন হিসেবে রয়েছে – শিল্পকলা, পুরাতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, ভূতত্ত্ব, প্রাণীতত্ত্ব।এটি বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন জাদুঘর। এখন এটি ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের পরিচালনাধীন। এখানে আকর্ষনীয় ও শিক্ষনীয় বিষয়বস্তুকে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। ইতিহাসের হারিয়ে যাওয়া স্থাপত্যেকে নকশা,ছবি,ও কাঠের কারুকার্যে সংরক্ষিত করেছে। এবং বাস্তবত নানান বস্তু ও শিল্পকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখানে আপনি যদি ভারতের নাগরিক হন তাহলে ১০০ রূপির টিকিট ক্রয় করতে হবে। আর যদি বিদেশি হন তাহলে ৫০০ রূপি দিয়ে টিকিট ক্রয় করতে হবে।
ইডেন-গার্ডেন্স:-
নামটি শুনতেই মনে হচ্ছে, চারপাশে সবুজ বৃক্ষের বেষ্টনীদ্বারা নির্মিত অবসর সময় কাটানোর জন্য উপযুক্ত একটি জায়গা।যুগলবন্দী প্রেমিক প্রেমিকার আদর্শ স্থান।আপনার ধারণা ভুল। আর আমার মতো করে আগে কেউ হয়তো আপনাদের জানায়নি? আসলে ইডেন-গার্ডেন্স হলো ভারতের কলকাতায় অবস্থিত একটি প্রাচীনতম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ১৮৬৪ সালে এ স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এটি বেঙ্গল ক্রিকেট টীম এবং আইপিএল এর কলকাতা নাইট রাইডার্সের হোম গ্রাউন্ড, এর পাশাপাশি এটি বিভিন্ন টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি খেলার ভেন্যু হিসাবেও সম্যক পরিচিত। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ম্যাচ, এই মাঠে ১৯১৭-১৮ সালে প্রথমবার খেলা হয় এবং প্রথম টেস্টম্যাচ খেলা হয় ১৯৩৪ সালে। এই মাঠে প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টটি খেলা হয় ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭-তে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে। ১৯৮৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপেরের ফাইনাল এই মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়।আশ্চর্য্যজনক বিষয় হলো একদিনেই এই মাঠে একটি ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল:-
বিট্রিশ স্থাপত্যের মধ্যে অন্যতম হলো ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল।এটি সাদা শ্বেত পাথর দ্বারা নির্মিত।আসলে এটি তৈরি করার মূল উদ্দেশ্যো ছিলো তাজমহল কে টেক্কা দেওয়া। এবং মহারানী ভিক্টোরিয়ার স্মৃতি সংবলিত করে রাখার ও একটি অন্যতম নিদর্শন এই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই স্থাপনাটি কালো রং দ্বারা পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছিলো। যাতে করে শত্রুবাহিনী এটি ধ্বংস করতে না পারে। আঁধার যতো ঘনিয়ে আসে ভবনটি ততোই আলোকিত হতে থাকে।ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এর পশ্চিম পাশে লেকের সংযোগে সবুজ উদ্যান।যুগলবন্দী প্রেমিক প্রেমিকার এক পছন্দনীয় জায়গা।
পাশেই রয়েছে ময়দান মাঠ।এই মাঠে প্রতিবছর নানা উৎসবের আমেজে সবাই মেতে উঠে।
কফি হাউস :
কফি হাউসের কথা শুনলেই! প্রথমে মনে পড়ে যায় ১৯৮৩ সালে গৌরী প্রসন্ন মজুমদারের লেখা ও সুপর্ণকান্ত ঘোষের সুরে মান্না দে কর্তৃক গাওয়া স্মৃতিচারণী “কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই”আজ আর নেই! এই একটি গানই বাঙালিদের পরিচিত করেছে কফি হাউজের সাথে। তা ছাড়া এই কফি হাউসটি কলেজ স্ট্রিটের মর্মস্থলে অবস্থিত যেখানে প্রখ্যাত সব বুদ্ধিজীবিরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক কাপ কফি নিয়ে আড্ডা জমান। পূর্বে অ্যালবার্ট হল নামে পরিচিত।তা ছাড়া বরণ্য কবি,সাহিত্যিক,লেখক, পাঠক, বুদ্ধিজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এখানে অহরহ আড্ডায় মগ্ন থাকতেন।এছাড়াও কলেজ স্ট্রিটের পাশে কফি হাউসের সম্মুখে সকল নতুন পুরাতন বই পাওয়া যায় বলে এখানে দর্শনার্থীদের ভীড় জমে উঠে।