কেন প্রতীকে নির্বাচন থেকে সরে এলো আওয়ামী লীগ।
নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তা : ২৫ জানুয়ারি ২০২৪
কেন প্রতীকে নির্বাচন থেকে সরে এলো আওয়ামী লীগ
এবার উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ থেকে সরে এসেছে আওয়ামী লীগ। বিষয়টিকে ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন অনেকে। যদিও আওয়ামী লীগ বলছে, এটি কৌশল নয়। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতেই এমন সিদ্ধান্ত। তবে দলের এই সিদ্ধান্তে দ্বিধাবিভক্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
২২ জানুয়ারি (সোমবার) রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি সভা শেষে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক নৌকা দেবে না।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বরাদ্দের পর মনোনয়ন বঞ্চিতদের জন্য আসন উন্মুক্ত করে দেয় আওয়ামী লীগ। এতে নৌকা পাওয়া ও নৌকা বঞ্চিতদের মাঝে ভোটযুদ্ধের পাশাপাশি দূরত্ব বেড়ে যায়। বিষয়টি সমাধানে সম্প্রতি সাংগঠনিক বর্ধিত সভারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা— এ অবস্থায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নতুন করে দলে ফাটল ধরাতে নারাজ আওয়ামী লীগ। ফলে ক্ষমতাসীনদের সিদ্ধান্ত, উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকছে না।
২০১৫ সালে আইন সংশোধন করে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আবারও স্থানীয় নির্বাচন পুরনো প্রথায় ফিরতে যাচ্ছে।
দলটির এমন সিদ্ধান্তে বিভক্ত তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। কারও মতে এ সিদ্ধান্ত সঠিক। আবার কেউ বলছেন দলীয় প্রতীক থাকাই ভালো ছিল।
ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ইউপি চেয়ারম্যান খালেদ মাসুদ খান লাল্টু দলের সিদ্ধান্তে একমত।
তিনি বলেন, আমি রাজনৈতিক দলের একজন কর্মী। আমার কাছে এ সিদ্ধান্ত সঠিক মনে হয়েছে। এর কারণ বিএনপি নামক একটি দল ভোটে না থাকায় ভোটারদের একটি অংশ ভোটে ভীষণ অনাগ্রহ দেখায়। ভোটকে অংশগ্রহণমূলক করার জন্য আগেও যেমন দলীয় প্রতীক ছিল না, এখনো সেটা থাকছে না।
অন্যদিকে সাভার উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব দলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন।
তার মতে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় ভবিষ্যতে সাংগঠনিক কাজে প্রভাব পড়বে।
এই উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, আমি মনে করি এটা সঠিক হয়নি। ভবিষ্যতে দলের মধ্যে এটা একটা নেগেটিভ প্রভাব ফেলবে।
এর ব্যাখ্যায় মঞ্জুরুল আলম রাজীব বলেন, যারা প্রতীক ছাড়া নির্বাচিত হবেন, দলের ক্রাইসিস টাইমে যদি তারা কোনো কাজ না করেন, তখন কি বলবেন?
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, এটা (উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তুলে দেওয়া) কোনো কৌশল না। এটা হলো বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আরপিও অনুযায়ী আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল, দলীয় মনোনয়ন দিলে তৃণমূল পর্যায়ে প্রতীক দেওয়া হবে৷ এবার আমাদের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দিলে ভালো হয়।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমরা কাউকে দল থেকে মনোনয়ন দেব না। এতে নির্বাচন আরও উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক হবে৷
আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদক আরও বলেন, আমরা প্রত্যাশা করছি যারা স্থানীয়ভাবে নির্বাচন করতে চায় তাদের সবাই অংশগ্রহণ করবে।