তত্ত্বাবধায়ক প্রশ্নে সফল হবে বিএনপি?
নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তা : সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩
দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন হয়নি, তা আবারও জানান দিল দেশটি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে।
বিএনপি চাইছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। এর পক্ষে দলটি ও শরীকরা নানা যুক্তি তুলে ধরছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সংবিধান থেকে একচুলও নড়বে না। সংবিধানের আলোকে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অনড় অবস্থানে আছে।
ফলে বিএনপিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে রাজপথে আন্দোলনরত আছে। ইতোমধ্যে ঘোষিত নতুন কর্মসূচি অনুসারের মঙ্গলবার থেকে বিএনপি কর্মসূচি পালন শুরু করেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগও নতুন কর্মসূচি দিয়েছে মঙ্গলবার।
বিএনপি ১২ দিনের যে কর্মসূচি দিয়েছে, তা যেন দেশকে অস্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে যেতে না পারে, তার জন্য আওয়ামী লীগও পাশাপাশি কর্মসূচি দিয়েছে। বলা চলে বিএনপিকে পাহারায় রাখার কর্মসূচি।
এমতাবস্থায় দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ায় জনমনে আতংক বিরাজ করছে। সামনের দিনগুলোতে দেশ আসলে কোন দিকে যাচ্ছে, তা নিয়ে মানুষ ভাবিত।
এই প্রেক্ষাপটে বলা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান একই আছে, কোনও হেরফের হয়নি। এতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির উভয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা হিসেবে ধরা যায়।
জানা যায়, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের ওপর জোর দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। নিউইয়র্কে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এ কথা জানান তিনি। জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশের ফাঁকে দুজনের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (আগের টুইটার) বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার বিষয়টি উজরা জেয়া নিজেই নিশ্চিত করেছেন। পোস্টে উজরা জেয়া লিখেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা হয়। রোহিঙ্গাদের সহায়তা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
বেশ কিছুদিন আগে উজরা জিয়া বাংলাদেশ সফর করে যান। এতে রোহিঙ্গা সমস্যাসহ নানা বিষয় গুরুত্ব পেলেও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সবকিছু ছাপিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে পর্যন্ত কৌতহলের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। যুক্তরাষ্ট্র আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কি ভাবছে, দেশটির অবস্থান কি , এ ব্যাপারে মানুষের কৌতহলের শেষ ছিল না। উজরা জেয়ার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি দল গত ১১ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করে। এ সফরে উজরা জেয়া বিএনপির দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থার ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি। ফের একই অবস্থান অজায় রাখলেন তিনি।
সম্প্রতি ভারতের নয়া দিল্লিতে জি২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। সেখানে ভারতের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতিথি ছিলেন। এ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অংশ নেন। জো বাইডেনের সঙ্গে শেখ হাসিনা মধুর কথাবার্তা হয়। এতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত ছিলেন। জো বাইডেনের সঙ্গে শেখ হাসিনার সেলফি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে বিএনপির নেতারাও নানা মন্তব্য করেন, যা ছিলো শ্লেষযুক্ত।
আসলে বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভরসা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করে নিতে চাইছলো। কিন্তু দেশটি এতে বিপরীত অবস্থানে থাকায় বিএনপিকে জনগণের ওপর ভর করেই আদায় করতে হবে। প্রশ্ন উঠেছে- এতে ব্যর্থতা ও সাফল্যের প্রশ্নটি। কিছুদিনের মধ্যে দিনের মতো এটিও পরিষ্কার হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্নে ব্যর্থতা ও সফলতা কোনটি বিএনপি ঘরে জমা হলো।