1. multicare.net@gmail.com : আদালত বার্তা :
সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০১ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু, নদীতে চলছে অভিযান বিচার বিভাগের কাজের মধ্যে দিয়েই জনগণ আমাদের পদক্ষেপ বুঝতে পারবে’–প্রধান বিচারপতি নিজের পেশায় সন্তুষ্ট থাকা নির্বাচনের সময় মন্ত্রণালয়গুলো ইসির হাতে থাকা উচিত: সাখাওয়াত রাজধানীতে সকাল থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি শনিবার আবহাওয়া যেমন থাকবে। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন এবং পূজায় ৩৫ অপ্রীতিকর ঘটনায় ১১ মামলা, ২৪ জিডি, ১৭ গ্রেপ্তার: আইজিপি আজ বিশ্ব ডিম দিবস সবাই যেন শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারে। পূজা ঘিরে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না: আইজিপি এসি একটানা কতক্ষণ চালানো যায়?

তাজমহলের টেন্ডার নাটকটি বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার দূর্নীতির চিরায়ত প্রহসন

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০২৩
  • ৯৫ বার পড়া হয়েছে

তাজমহলের টেন্ডার নাটকটি বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার দূর্নীতির চিরায়ত প্রহসন

এডভোকেট মোহাম্মদ এনামুল হক  আদালত বার্তা :১৪ জুলাই ২০২৩।
বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় দূর্নীতির শিকলে প্রত্যেকেই আষ্টেপৃষ্টে বা়ঁধা তা অনেকেই টের পায় না। সম্প্রতি ঢাকার মঞ্চে দূর্নীতির ভয়াবহ বাস্তবতা নিয়ে হাস্য—ব্যঙ্গের ধারায় নির্মিত ‘তাজমহলের টেন্ডার’ নাটকটি ইঙ্গিতপূর্ণ সমাজের নানা চিত্র দেখিয়ে গেল। হিন্দি ভাষায় অজয় শুক্লার ‘তাজমহল কা টেন্ডার’ থেকে অনুবাদ করেছেন সফিকুন্নবী সামাদী। নির্দেশনায় মীর বরকত। এটি কণ্ঠশীলনের ১০ম প্রযোজনা। ইতোপূর্বে তাদের ‘যা নেই ভারতে’, ‘যাদুর লাটিম’ অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। এ বছর কণ্ঠশীলন ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এ নাটকটি নির্মাণ করেছে।

গত ৫ই জুন, ঢাকার শিল্পকলার এক্সপেরিমেন্টাল মঞ্চে নাটকটির উদ্বোধন মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়। আজ ১৪ জুলাই দ্বিতীয়বার মঞ্চস্থ হলো। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যজন ব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি নাটকটি উপভোগ করেন। নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার পর তিনি নাটক সম্পর্কে বলেন বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার একটি বাস্তব চিত্র এই নাটকটিকে ফুটে উঠেছে সমাজ ব্যবস্থায় রন্ধে রন্ধে যে দুর্নীতি তা নাটকের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার হয়েছে তার জন্য নাটকের সাথে জড়িত সকল কলাকুশলীদেরকে তিনি সাধুবাদ জানান এমনিভাবে সমাজ ব্যবস্থার চালচিত্র তুলে ধরার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান।

তাজমহলের টেন্ডার নাটকটিতে
সম্রাট শাহজাহান তাজমহল নির্মাণে প্রকৃতপক্ষে কোনো টেন্ডার ডাকেননি। তাই এ কাহিনি ইতিহাসভিত্তিক নয়। কিন্তু নাট্যকার সমকালীন দূর্নীতি তুলে ধরতে এমন গল্পের আশ্রয় নিয়েছেন। কণ্ঠশীলনের এ নাটকটি প্রসেনিয়াম মঞ্চে উপস্থাপন। মঞ্চমধ্যে রাজপ্রাসাদের নৈর্ব্যক্তিক সাজেশন। তারমাঝে দুটো চরিত্রের প্রতিমূর্তি। একটির গায়ে রক্তের চিহ্ন। আর দুপাশে দুটো হাতের চিত্র। মঞ্চটিই কেমন যেন এক দোলা দেয়। নাটকটি শুরু হয় ইতিহাসের শাহজাহান ও তার স্ত্রী মমতাজের আবেগিক মুহূর্ত মন্থনের মধ্য দিয়ে। তারপর নৃত্য—গীত—বন্দনা সংগীতে মূল গল্পের শুরু। নাট্যগল্পে সম্রাট শাহজাহান তাজমহল নির্মাণ করবেন। ঠিকাদার ইঞ্জিনিয়ার গুপ্তাজি। ধুরন্ধর গুপ্তাজি ও তার সহকারী সুধীর শাহজাহানকে ভুল বোঝাতে থাকেন। নানা কৌশলে তাজমহল বানানোর আগেই বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ এবং তা আত্মসাৎ করতে শুরু করেন। ডিজাইন, সাইট অফিস, কর্মচারী নিয়োগ প্রভৃতি কাজেই অর্থ লোপাট করতে থাকেন। যমুনা বাঁচাও আন্দোলন কমিটিকে দিতে হয় চাঁদার টাকা। জমি ক্রয় বাবদ খরচ দেখানো হয় প্রচুর টাকা। সেই জমিতে নতুন বিল্ডিং কন্সট্রাকশনেও লাগে টাকা। এসবের বেশির ভাগই মিথ্যা। শুধু খাত বানিয়ে টাকা খাওয়া। এভাবে প্রায় দেড় যুগের বেশি সময় চলে গেলেও নির্মাণ কাজ তো দূরের কথা টেন্ডারই হয়ে উঠে না। যখন সম্রাট শুনেন তাজমহলের জন্য যে জমি ক্রয় করেছিলেন সেটা কোর্টের অর্ডারে হাতছাড়া হয়ে গেছে, তখন শাহজাহান হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান। আসলে সে জমি কেনা—বেচা বা ভৌতনির্মাণ শুধু কাগজেই ছিল।

কাহিনি সরলরৈখিক হলেও সংলাপগুলো অত্যন্ত নাটকীয়। কণ্ঠশীলনের সদস্যরা বাচিকচর্চা করেন বলে বাচিক অভিনয়ে তাদের দক্ষতা সবসময়ই অতুলনীয়। শাহজাহান চরিত্রে এ কে এম শহিদুল্লাহ কায়সার অভিনয়ে প্রাণের উচ্ছ্বাস ছুঁয়ে ছিল। সংলাপ প্রক্ষেপণে ছিল স্পষ্টতা আর স্বতঃস্ফুর্ত চলন। মমতাজ চরিত্রে আইরিন খানমের সংলাপ না থাকলেও নাটকের অত্যন্ত গুরুত্ববহ একটি চরিত্র। মঞ্চে সারাক্ষণ কথা বলেছে গুপ্তাজি চরিত্রে সোহেল রানা। স্বরবাচন অভিব্যক্তিগুলো প্রাণবন্ত। আর সাথেই সুধীর চরিত্রে সালাম খোকন হাস্যরসের আধার হয়ে উঠেছিলো। ভাইয়াজি চরিত্রে জেএম মারুফ সিদ্দিকী, শর্মা চরিত্রে নিবিড় রহমান, চোপড়া চরিত্রে মো. আব্দুল কাইয়ুম, বাঈজী ও দ্বিতীয় নেতা চরিত্রে অনন্যা গোস্বামী মঞ্চে যেন প্রাণ জাগিয়ে তুলেছিলেন। কৌতুকপূর্ণ সংলাপ, হাস্যকর হাবভাব, বিশ্বাসযোগ্য অভিনয় ও চলনে যেন দর্শক হাসতে হাসতে অস্থির হয়ে উঠছিল।

নির্দেশক সমকালীন ও চিরন্তন বাস্তবতার প্রেক্ষিতে দুর্নীতির ব্যাঙ্গাত্মক চিত্র দেখাতে চেষ্টিত ছিলেন। তবে মনে রাখতে হবে, নান্দনিক শিল্প রচনায় ইতিহাসের সত্যতা তুলে ধরারও প্রয়োজন আছে। এমনকি দেরিদার ডিকনস্ট্রাশনেও ইতিহাস বিচ্যূতি সমর্থন করে না; মূল সত্যটি অক্ষুণ্ণ রেখে তার উপকরণ নিয়ে নতুন নতুন শিল্প—কল্পনার সৌধ নির্মাণ করে।

নাটকের সংলাপে পেমেন্ট, ডিজাইন, টেন্ডার, কন্সট্রাকশন, ব্লাডিফুল ইত্যাদি প্রচুর ইংরেজি শব্দ সমকালীনতাকে নির্দেশ করে। কিন্তু নির্দেশক দৃশ্যনির্মাণে কোনো সময়কাল দেখাতে চাননি। এমনকি পোশাকেও নয়। নৈর্ব্যক্তিক আলো—আঁধারি একটি রূপরেখা টেনেছেন। প্রসেনিয়াম মঞ্চে কৌতুক রসাত্মকভাবে স্যাটায়ার করতে চেয়েছেন।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট
error: Content is protected !!