দলিল লেখকরা অন্যায় করলে আসামি হবেন না করলে নয়: আইনমন্ত্রী
ডেস্ক রিপোর্ট, আদালত বার্তা:৫ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, দলিল লেখকরা অন্যায় করলে আসামি হবেন, অন্যায় না করলে হয়রানিমূলকভাবে আসামি করা যাবে না। দলিল লেখকরা অত্যন্ত বিবেচক, দেশের উন্নয়ন জনগণের কাছে পৌঁছে দেন। দেশে কী হচ্ছে সেটা জনগণকে জানান।
শনিবার দুপুরে (৪ মার্চ) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দলিল লেখকদের অপকার হয় এমন কোনো আইন এখনো করা হয়নি। দলিল লেখাটা অত্যন্ত প্রয়োজন, সাবরেজিস্ট্রার অফিস অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমি যখন প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেলাম, এককথায় তিনি রাজি হয়ে গেলেন যে, প্রত্যেকটা উপজেলায় একটা করে সাবরেজিস্ট্রি অফিস হবে।
তিনি বলেন, প্রত্যেকটা উপজেলায় একটা করে সাবরেজিস্ট্রি অফিস হবে। এটাকে বলা হবে সাবরেজিস্ট্রি কমপ্লেক্স। এটাকে কমপ্লেক্স বলা হবে এ কারণে যে, এখানে যারা জমি বিক্রি করতে আসবেন এবং যারা কিনতে আসবেন তারা বসতে পারবেন। সেই সঙ্গে যারা দলিল লিখবেন তাদেরও বসার জায়গা হবে।
আনিসুল হক বলেন, আপনারা দাবি করছেন আমরা বসার ব্যবস্থা করছি। এ বিল্ডিং হলে আপনাদের বসার জায়গা হয়ে যায়। শেখ হাসিনার সরকারের আমলে কি আপনাদের আকাশের নিচে বসাতে পারি? আপনারা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদককে স্বীকৃতি দিতে বলেছেন আমি এটা দিলাম।
দলিল লেখকদের প্রশিক্ষণ ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বাস করেন, মাঝে মাঝে দলিল পড়তে গেলে মাথায় যা চুল আছে তাও পড়ে যায়। এরকম হাতের লেখা। দলিল লেখকদের সবচেয়ে বড় পুঁজি হাতের লেখা, দলিল লেখকদের সবচেয়ে বড় সম্পত্তি হচ্ছে হাতের লেখা, এটা হচ্ছে তাদের সবচেয়ে বড় পুঁজি। আপনাদের হাতের লেখা যার ভালো না, তার লেখাটা চেষ্টা করলেই ভালো হয়।
আইনটা জানা, আইনও জানতে হয়। স্ট্যাম্পট অ্যাক্ট জানতে হয়, সিভিল প্রসিডিউর জানতে হয়।সবকিছু জানতে হয়, এর জন্য প্রশিক্ষণ দরকার। এটার ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই। কিন্তু প্রশিক্ষণটা কীভাবে হবে, এটা আমাকে একটু সময় দেন, আমি আগামী নির্বাচনের পর নূরে আলমসহ (দলিল লেখক সভাপতি) আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই একটা ছক তৈরি করবো, ছক তৈরি করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো।
তিনি বলেন, দেখুন এটা অর্থের ব্যাপার, তাই না? আমি আপনাদের মন জয় করার জন্য আর আপনারা আমাকে বাহবা দেবেন, এ কারণে এখন একটা ওয়াদা দিলাম, আমি এ ক্যাটাগরির না। আমি আপনাদের দাবিটা আমাদের সবার অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছাবো। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সবকিছু বিবেচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবো।
আইনমন্ত্রী বলেন, যুক্তির কথা বললে আপনারাও শোনেন, আমিও শুনি। এখন কথা হচ্ছে যে, দাবি-দাওয়ার কথাও শেষ করলাম, আরও কিছু আছে, এগুলো পড়বো। আপনাদের পরিষ্কার করতে চাই, যেটা যুক্তিসংগত হবে, ইনশাআল্লাহ্ সেটা মেনে নেবো। যেটা যুক্তিসঙ্গত হবে না সেটা আবার আপনাদের কাছে নিয়ে আসবো। এটা আপনাদের সঙ্গে আলোচনায় থাক। আপনাদের তো মনে আছে, আমারও মনে রাখতে হবে, আমরা কখনোই কাউকে আমাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করতে দেবো না।
দলিল লেখকদের মামলায় আসামি করা যাবে না- সমিতির এমন দাবির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, দলিল লেখকরাও তো দেশের নাগরিক। আসামি করা যাবে না, এটা কেমনে বলি আমি। তাহলে তো আমার ব্যবসাই থাকবে না।
মন্ত্রী বলেন, ব্যাপারটা হচ্ছে অন্যায় করলে আসামি হবেন। অন্যায় না করলে হয়রানিমূলকভাবে আসামি করা যাবে না। তাছাড়া আপনারা অত্যন্ত বিবেচক, দেশের উন্নয়ন জনগণের কাছে পৌঁছে দেন। দেশে কী হচ্ছে সেটা জনগণকে জানান।