পদ্মায় স্পিডবোট দুর্ঘটনা: নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে লিগ্যাল নোটিশ
ডেস্ক নিউজ আদালত বার্তা:১১ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন পদ্মা নদীতে স্পিডবোট সংঘর্ষে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
ইমেইল ও ডাক যোগে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ফরিদপুর ও ঢাকার জেলা প্রশাসক এবং চরভদ্রাসন ও দোহার উপজেলার নির্বাহী অফিসার কে লিগ্যাল নোটিশে বিবাদী করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) মানবাধিকার সংস্থা ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওসার এই নোটিশ পাঠান।
নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।
তাছাড়া নদী পারাপারে যাত্রীদের বীমার আওতায় এনে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনায় সেখান থেকে অর্থ প্রদানের জন্য এবং সংঘটিত দুর্ঘটনাটি তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে অনুরোধ করা হয়েছে।
তা না হলে আইনি প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে বলেও উক্ত নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে যে, হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন চরভদ্রাসনের গোপালপুর ঘাট এবং ঢাকা জেলার দোহারের মৈনটঘাট দিয়ে পদ্মা নদী পারাপার করে। উক্ত ঘাট দু’টো উপজেলা প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনাধীন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় দুই ঘাট থেকে যাত্রী বোঝাই করে গন্তব্যে রওয়ানা হলে দুইটি স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষে এখনো পর্যন্ত পাচঁজন নিহত হয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, স্পিডবোট গুলোর উপর নোটিশ গ্রহীতাদের নিয়ন্ত্রণ থাকার পরও কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারার কারণেই এতগুলো প্রাণ অকালে ঝরে গেছে।
তারা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায় পাচঁজনের মৃত্যুসহ অসংখ্য মানুষ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন, যাদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
দেশের সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জীবনের অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ -এর সরাসরি লঙ্ঘন করেছেন বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত (৫ ফেব্রুয়ারি) রবিবার সকালে পদ্মা নদীতে দুই স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে সুকুমার হালদার নামের একজনের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে ওই দুর্ঘটনায় আরও যাত্রী নিখোঁজের তথ্য পেয়ে ঢাকা, ফরিদপুর, চরভদ্রাসন ফায়ার সার্ভিস ও নৌ-পুলিশের যৌথ টিম সোমবার বিকাল থেকে নিখোঁজদের খোঁজে পদ্মা নদীতে দুর্ঘটনাস্থলসহ সম্ভাব্য বিভিন্ন পয়েন্টে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন।
উদ্ধার অভিযানে গত বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। ফলে এ ঘটনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ছয়জন।