বাংলাদেশে জাইকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণ বিতরণের রেকর্ড
বাংলাদেশকে নমনীয় শর্তের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণের প্রতিশ্রুতি ও অর্থ ছাড় করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
ডেস্ক নিউজ আদালত বার্তা :২৮ মে ২০২৩।
বাংলাদেশে জাইকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণ বিতরণের রেকর্ড
বাংলাদেশকে নমনীয় শর্তের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণের প্রতিশ্রুতি ও অর্থ ছাড় করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। দেশটির সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে (এপ্রিল–মার্চ) এ রেকর্ড হয়েছে।
রোববার (২৮মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি এ তথ্য জানিয়েছে।
বিদায়ী এ অর্থবছরে সংস্থাটি বাংলাদেশের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে মোট ৩৩১ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন বা ২৫৮ বিলিয়ন টাকা (প্রতি ইয়েন দশমিক ৭৮ টাকা ধরে) অর্থসহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। যার মধ্যে ২৬১ বিলিয়ন বা ২৬ হাজার ১০০ কোটি জাপানি ইয়েন ছাড়ও করেছে জাইকা। আনুষ্ঠানিক উন্নয়ন সহযোগিতা (ওডিএ) অংশ হিসেবে এই ঋণ সহযোগিতা দিয়েছে জাইকা। জাইকা জানিয়েছে, এর আগে গত অর্থবছরে সংস্থাটি বাংলাদেশের জন্য সর্বোচ্চ ২৬৪ বিলিয়ন বা ২৬ হাজার ৪০০ কোটি জাপানি ইয়েন ছাড় করেছিল। ২০২১ সালেই জাইকা বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ঋণসহায়তা দিয়েছিল।
বাংলাদেশে জাইকার ওডিএ ঋণ প্রতিশ্রুতির সঙ্গে জড়িত ৫টি প্রকল্প হলো ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট উন্নয়ন প্রকল্প, দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্প, মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প ও জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনের ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প।
জাইকা জানিয়েছে, ২০২০ অর্থবছরে (এপ্রিল’২০১৯–মার্চ’২০২২) বাংলাদেশে ৩৭৩ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সংস্থাটি। স্থানীয় পর্যায়ে সংস্থাটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ অঙ্কের ঋণ প্রতিশ্রুতি ছিল সেটি। তবে ওই বছর করোনার কারণে বৈশ্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় সংস্থাটি মাত্র ১৮০ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন ঋণ ছাড় করেছিল।
গত এক দশকজুড়ে ওডিএ ঋণ, অনুদান ও কারিগরি সহযোগিতা স্কিমের মাধ্যমে জাইকা বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে তুলেছে। যার ফলে দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামোগত উন্নয়নের পথ আরও সুগম হয়েছে।
অদূর ভবিষ্যতেও জাইকা স্থানীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের সঙ্গে একইভাবে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যাশা রাখে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশে জাইকার ওডিএ অর্থায়ন কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৭৪ সালে।
চলতি মাসের প্রথম ২৬ দিনে প্রবাসীরা ১৪১ কোটি ৯৪ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৮ টাকা ধরে প্রতি ডলার ধরে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মধ্যে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১১১ কোটি ৮১ লাখ ডলার। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৪ কোটি ৮৫ লাখ ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৭ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, চলতি মাসে যেভাবে রেমিট্যান্স আসছে, তা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয় দাঁড়াবে ১৬৯ কোটি ২৫ লাখ ডলার।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৬ কোটি মার্কিন ডলার, ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার, মার্চে এসেছে ২০২ কোটি ডলার এবং এপ্রিলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছে ১৬৮ কোটি ৩৪ লাখ মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশ ও জাপান পারস্পরিক সুবিধা ও আঞ্চলিক সমৃদ্ধির জন্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা সুদৃঢ় করবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরি। সম্প্রতি “আওয়ার শেয়ারড এস্পিরেশনস: এক্সেলারেটিং দ্য জাপান-বাংলাদেশ স্ট্যাটেজিক পার্টনারশিপ” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (জেবিসিসিআই্), জাপানিজ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এসোসিয়েশন ইন ঢাকা (জেসিআই্এডি, শো-কো-কাই) এবং জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো)-এর সহযোগিতায় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় বেসরকারি খাত ও চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র স্টেকহোল্ডার, উপদেষ্টা এবং সরকারের প্রতিনিধিরা একত্রিত হয়ে জাপান-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে একটি রোডম্যাপ গঠনে গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরি বলেন, “গত বছর, আমরা জাপান-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করেছি। উন্নতির এই ধারা আমাদের সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ঐতিহ্যগত ক্ষেত্রগুলোর বাইরেও নতুন নতুন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সুদৃষ্টি দিয়েছেন। উভয় দেশের সরকার প্রধানরা আন্তঃসহযোগিতা বাড়ানোর জন্য তিনটি প্রধান ক্ষেত্রে তাদের দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছেন – স্থানীয় ও বৈদেশিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সহযোগিতা বৃদ্ধি; পারস্পরিক সুবিধা ও আঞ্চলিক সমৃদ্ধির জন্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা সুদৃঢ় করা; এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতার সম্প্রসারণ ও জাতিগত বিনিময় ব্যবস্থা চালু করা