বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
সম্পাদকীয়
এডভোকেট মোহাম্মদ এনামুল হক, আদালত বার্তা ঃ ১৬ অক্টোবর ২০২৩।
অধিক ঘনবসতিপূর্ণ এদেশে, বিভিন্ন বৈরী প্রকৃতিকে পেছনে ফেলে খাদ্যশস্য উৎপাদনে আজ আমরা বিশ্বের কাছে উদাহরণ।
গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার খাদ্যশস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। সারের দাম কমিয়েছে, কৃষকদের ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগ দিয়েছে, সেচের পানির জন্য ভর্তুকির টাকা কৃষকের একাউন্টে সরাসরি ট্রান্সফারসহ একইসঙ্গে ১ কোটি ৮২ লক্ষাধিক কৃষকের মাঝে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড বিতরণ করেছে। এছাড়া দেশের ৩৫ টি জেলায় ২৫ শতাংশ ভর্তুকিতে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, হারভেস্টরসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে। সরকারের এসব উদ্যোগ দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশকে অনুসরণ করে ভারত সরকার তাদের কৃষকদের জন্যেও অনুরূপ সহায়তার ব্যবস্থা করেছে।
কয়েক দশক আগেও দেশে হেক্টরপ্রতি গড়ে চাল উৎপাদিত হতো ২ টন, এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৬ টন। বিশ্বে গড়ে হেক্টরপ্রতি ভূট্টা উৎপাদিত হয় ৫.১২ টন, বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় প্রায় ৭ টন। বিভিন্ন কল্যাণমূলক উদ্যোগ গ্রহনের কারণে খাদ্যশস্য উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশের তালিকায় উঠে এসেছি আমরা।
সরকার এখন খাদ্যের পাশাপাশি জনগণের পুষ্টির দিকে নজর দিচ্ছে। দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদার সবচেয়ে বড় যোগান দেয় মাছ। মাছ উৎপাদনের জন্য সরকার বিভিন্ন সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করছে। দেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৫ দশমিক ৬৫ লাখ মেট্রিক টন। পুষ্টি চাহিদার যোগান দিতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য ফল। ফলজ গাছ রোপনেও সরকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
কয়েকবছর ধরে বিশ্বে চলমান মহামারী, যুদ্ধ-বিগ্রহ থাকার পরও বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদনে এর প্রভাব অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। এটা সম্ভব হয়েছে সরকারের বিভিন্ন সুদূরপ্রসারী নীতি ও পদক্ষেপের জন্য।
গত ১৪ বছরে এ সরকারের উল্লেখযোগ্য বড় সাফল্য “মঙ্গা” শব্দটি মুছে দেওয়া। জামায়াত-বিএনপি জোট সরকারের আমলে সম্পদের অসম বণ্টন, দুর্নীতি, জনগণের প্রতি উদাসীনতাই ছিলো উত্তরবঙ্গের মঙ্গা ও খাদ্যের অভাবে জনগণের প্রাণহানির মূল কারণ।
বর্তমান সরকার শুধু সারের দাম কমায়নি, পাশাপাশি কৃষকের সারের চাহিদা পূরণ করেছে। কিন্তু ২ দশক আগেও বিএনপি-জামায়াত জোট সারের দাবীতে আন্দোলনকৃত কৃষকদের গুলি করে হত্যা করেছিলো।
আজ সবকিছুর গুণগত ও ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। কৃষকের মুখে হাসি ফুটছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা পৌছে গেছে কৃষকের দোরগোড়ায়। কৃষকেরা এখন কৃষি কল সেন্টারের শর্ট কোড নম্বর ১৬১২৩ ডায়াল করে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিতে পারছে।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সবাইকে আহবান জানিয়েছেন ‘বাড়ির আঙিনাতে খাদ্য উৎপাদন’ করতে। এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখতে। খাদ্যের জন্য আমরা কারো উপর নির্ভরশীল থাকবো না। নিজেদের খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা আমরা নিজেরাই পূরণ করব।