ব্রিটেনের পার্লামেন্টে ৬৫০ টি আসনের মধ্যে ৪১২ টি আসনে বিরোধী লেবার পার্টির জয়।
নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তাঃ৫ জুলাই ২০২৪।
পরাজয়ের দায় নিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা সুনাকের
ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে লেবারদের কাছে দলের ভরাডুবির পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাচ্ছেন ঋষি সুনাক। ফলপ্রকাশের পর শুক্রবার (৫ জুলাই) ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট থেকে এক বিবৃতিতে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।
শুক্রবার (৫ জুলাই) ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে এক বক্তব্যে পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ছবি: রয়টার্স
শুক্রবার (৫ জুলাই) ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে এক বক্তব্যে পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
সুনাক এখন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সাথে দেখা করতে যাবেন। এর মাধ্যমে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার প্রধানের দায়িত্ব হস্তান্তর এবং বিজয়ী দল লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমারকে ডাউনিং স্ট্রিটে প্রবেশের পথ সুগম করবেন।
কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হিসাবে সুনাকে পদত্যাগের এই সিদ্ধান্তে শিগগিরই নেতৃত্বের আরেকটি লড়াই শুরু হবে। নির্বাচনে বিপর্যয়কর ফলাফলের পরে নিজেকে নতুন করে গড়তে চান সুনাক। তিনি বলেছেন, নতুন নেতা খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত তিনিই দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের ৪৬ দিনের শাসন শেষ হওয়ার পর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই ২০২২ সালের অক্টোবরে দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন সুনাক।
আগাম নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা আরও পাকাপোক্ত করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ব্রিটিশ জনগণের রায়ে ক্ষমতাচ্যুত হলেন। তবে বর্তমান সংসদের পূর্ণ মেয়াদে এমপি হিসেবে থাকার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরই শুরু হয় গণনা। শুক্রবার (৫ জুলাই) ঘোষণা করা হয় ফলাফল। ফলাফলে জনমত জরিপের প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিরোধী লেবার পার্টি বড় জয় পেয়েছে। সবশেষ তথ্য মতে, সংসদের ৬৫০টির মধ্যে ৪১২ আসনে জয় নিশ্চিত করেছে দলটি। এর মধ্যদিয়ে পতন হয়েছে ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা কনজারভেটিভ পার্টির।
নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ পার্টির পরাজয় মেনে নিয়েছেন দলের প্রধান ঋষি সুনাক। জয়ীয় হওয়ায় স্টারমারকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন,
সব পক্ষের শুভেচ্ছার মধ্য দিয়ে আজ ক্ষমতা শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে হাত বদল করবে। এখানে অনেক কিছু শেখার ও তা প্রয়োগ করার আছে এবং আমি কঠোর পরিশ্রমী কনজারভেটিভ প্রার্থীদের ক্ষতির দায় নিচ্ছি…আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’
ব্রিটেনের নিয়ম অনুযায়ী, ৯ জুলাই নতুন পার্লামেন্ট সদস্যদের শপথ গ্রহণ ও স্পিকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আর ১৭ জুলাই রাজা তৃতীয় চার্লসের উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে নতুন সরকার।
ভরাডুবির মাঝে নিজ আসন ধরে রাখলেন সুনাক
নিজ আসনে হেরে গেলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস
যুক্তরাজ্যে লেবার পার্টির ‘ঘাঁটি’ গুঁড়িয়ে ফিলিস্তিনপন্থি আদনানের জয়
৪১০ আসনে জয়ের রেকর্ড লেবার পার্টির
যুক্তরাজ্যে ফের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৪ নারীর জয়
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে লেবার পার্টি। দেশটিতে টানা ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা কনজারভেটিভ পার্টির এবার ভরাডুবি হয়েছে। এবারের নির্বাচনে লেবার পার্টির মনোনয়নে জয়লাভ করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চার প্রার্থী।
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চার প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে কোনো দলের ৩২৬ আসনের প্রয়োজন। লেবার পার্টি ৪১২ আসনে জয় নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১২১টি আসন।
ক্ষমতাসীন দলের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এরই মধ্যে পরাজয় মেনে নিয়ে লেবার পার্টির নেতা কেয়ার স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। লেবার পার্টির বিশাল এই জয়ের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চার প্রার্থীও বাজিমাত করেছেন।
রুশনারা আলী
লেবার পার্টি থেকে টানা পঞ্চমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়েছেন রুশনারা আলী। টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে জিতেছেন তিনি। জানা যায়, রুশনারা আলী ১৫ হাজার ৮৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী আজমল মাশরুর পেয়েছেন ১৪ হাজার ২০৭ ভোট।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুশনারা আলী। লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনে ২০১০ সাল থেকে এর আগে টানা চারবার এমপি নির্বাচিত হন তিনি। ২০১০ থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রুশনারা আলী। এরপর তিনি ২০১৩ সালের অক্টোবরে ছায়া শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
টিউলিপ সিদ্দিক
যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে জয় পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকও। ব্রিটেনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে এমপি হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।