ব্র্যাক ব্যাংকে এনবিআরের অভিযান : ছুটির দিনে বসল হাইকোর্ট
নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তাঃ২ মে ২০২৪
ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান-১ শাখায় পাওনা টাকা আদায়ে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) মধ্যরাত পর্যন্ত এনবিআরের অভিযান পরিচালনার প্রেক্ষিতে মহান মে দিবসের ছুটির দিনে বসেছিলেন হাইকোর্ট।
ব্র্যাক ব্যাংক ও অন্য দুটি কোম্পানির আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের অনুমতি নিয়ে গতকাল বুধবার (১ মে) বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ বসেন।
আদালতে ব্র্যাক ব্যাংকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিনহাজুল হক চৌধুরী বলেন, আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকার পরও কোনও ধরনের নোটিশ না দিয়ে এনবিআরের ১৫ জনের টিম রাতভর অভিযানের নামে তল্লাশি চালায়। তারা ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি, হুমকি প্রদর্শন করেন। রাত ১২টা পর্যন্ত ব্র্যাকের কর্মকর্তাদের আটকে রাখেন।
এসময় ব্র্যাক ব্যাংকের আইনজীবী ব্যাংকের গুলশান শাখায় উল্কা গেমস লিমিটেডের নামে থাকা হিসাব ফ্রিজ থাকার বিষয়টিও আদালতে উপস্থাপন করেন।
শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আগামী রোববার (৫ মে) পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান শাখায় উল্কা গেমস লিমিটেডের নামে থাকা হিসাবের লেনদেন স্থগিত করেন। এছাড়া এই মামলায় এনবিআরকে পক্ষভুক্ত করেন।
আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, আদালত আমার কাছে জানতে চেয়েছেন প্রকৃতপক্ষে মঙ্গলবার রাতে ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান শাখায় কী ঘটেছিল। আমি রোববার (৫ মে) আদালতে লিখিতভাবে এসব তথ্য জানাবো। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে রোববার।
আদালতে ভারতীয় কোম্পানি মুনফ্রগের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আনিতা গাজী রহমান।
প্রসঙ্গত, ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান শাখায় উল্কা গেমস লিমিটেডের নামে থাকা হিসাব ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ফ্রিজ করা ছিল। সিআইসির কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল টাকা দেশের বাইরে পাচার হয়ে যেতে পারে। সে কারণে হিসাব সচল করে টাকা আদায়ে কর অঞ্চল-১৫ কে নির্দেশনা দেয় সিআইসি।
আদেশ পেয়ে গুলশান শাখায় যান কর্মকর্তারা। তবে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ প্রায় ১৩ ঘণ্টা ব্যাংকে অবস্থান করেও টাকা ছাড়াই শাখা ত্যাগ করতে বাধ্য হন কর কর্মকর্তারা। টাকা না পেলেও লিখিত ব্যাখ্যা নিয়ে যায় কর অঞ্চল-১৫ এর কর্মকর্তারা। একইসঙ্গে এনবিআর মনে করছে— ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এমন আচরণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
জানা গেছে, লিগ্যাল প্রক্রিয়ায় সরকারের পাওনা আদায়ে এনবিআরের একটি বিশেষ টিম অভিযানে যায়। কিন্তু ওই কোম্পানির অভ্যন্তরীণ সমস্যায় উল্কা গেমস ও ভারতীয় কোম্পানি মুনফ্রগের মধ্যে মামলা চলমান রয়েছে।
ওই অজুহাতে টাকা ছাড় করতে রাজি নয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এনবিআরের পাওনার সঙ্গে ওই মামলার কোনো যোগসাজশ নেই। করের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। সে কারণে এনবিআর চেয়ারম্যানের লিখিত অনুমোদন নিয়েই রাজস্ব আদায় করতে গেছে বিশেষ টিম।