‘ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল’
মোহাম্মদ এনামুল হক, আদালত বার্তা : ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪
‘ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে অবদান, সেই আন্দোলনের যে ইতিহাস, সেখান থেকেও জাতির পিতার নামটা মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল।”
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অমর একুশে পদক বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে বাঙালিরা রক্ত দিয়েছে, রক্তের অক্ষরে ভাষার অধিকারের কথা লিখে গিয়েছে। পাকিস্তানি শাসকরা যখন আমাদের মায়ের ভাষার অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছিল, সংখ্যাগরিষ্ঠতায় আমরাই ছিলাম বেশি। আর যে ভাষাটা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল, উর্দু, সেটা কারও মাতৃভাষা নয়, পুরো পাকিস্তানের ৭ ভাগ লোকও এটা ব্যবহার করত কি না, সেটাই প্রশ্ন। অথচ আমরা বাঙালিরা ছিলাম প্রায় ৫৫ ভাগ।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের ভাষা কেড়ে নিয়ে দ্বিজাতীয় একটা ভাষা যখন চাপিয়ে দিতে চায়, তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র। তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তমদ্দুন মজলিশসহ আরও কয়েকটি সংগঠন নিয়ে বাংলা ভাষাকে রক্ষার জন্য সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলেন এবং আন্দোলন শুরু করেন। সেই আন্দোলনের পথ ধরেই আমরা আমাদের স্বাধিকার আদায় করেছি, স্বাধীনতা পেয়েছি।”
বিশ্ব দরবারে মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে চলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “একুশ আমাদের মাথা নত না করার শিক্ষা দিয়েছে।”
ভাষা আন্দোলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা তুলে শেখ হাসিনা বলেন, “ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে পাবেন। জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ হয়েছিল। ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, সে ভাষণও নিষিদ্ধ ছিল। ইতিহাস বিকৃত করে জাতির পিতার নামটা পর্যন্ত মুছে ফেলা হয়েছিল।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। সারা পৃথিবী আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস পালন করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হারিয়ে যাওয়া মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য একটি ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আজকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য কয়েকজনকে আমরা একুশে পদক দিতে পেরে আনন্দিত, গর্বিত। সমাজে আরও অনেক গুণী আছে। একসঙ্গে তো সবাইকে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে, ত্যাগী এই মানুষদের খুঁজে বের করা সমাজের উচ্চ শ্রেণির দায়িত্ব।”