সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় ভোটে তোড়জোড় ইসির।
ডেস্ক নিউজ আদালত বার্তা:১০ এপ্রিল ২০২৩।
সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় ভোটে তোড়জোড় ইসির
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সব নির্বাচন সেরে ফেলতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য শুরু হয়েছে তোড়জোড়। এরইমধ্যে পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। অন্যদিকে পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের যেসব জায়গায় শূন্য পদ আছে সেখানকার তালিকা পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, ঘোষণা অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষদিকে অথবা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচন। সহসাই সংসদ নির্বাচনের পুরো কর্মযজ্ঞ শুরু করতে যাচ্ছে ইসি। তাই এর আগে স্থানীয় পর্যায়ের সব ভোট সেরে নিতে চায় সংস্থাটি। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে এগুলো গুছিয়ে আনতে চায় কমিশন।
সম্প্রতি ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমের এক বক্তব্যে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
ইসি সচিব বলেছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের পর স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচন করা সম্ভব নয়। কেননা ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সংসদ নির্বাচন করতে হবে।
ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী মে মাসের মধ্যে উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ এবং জুনের মধ্যে সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সব ভোট ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) হবে বলেও ইসি জানিয়েছে।
সামনে চট্টগ্রামের একটি সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচন আছে। চট্টগ্রাম-৮ আসনে আগামী ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে উপ-নির্বাচন। অন্যদিকে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ভোট হবে আগামী ২৫ মে। খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে নির্বাচন হবে ১২ জুন। রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনে নির্বাচন হবে ২১ জুন।
ইসি জানিয়েছে, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) হবে এই নির্বাচন।
সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এবার স্থানীয় সরকারের শূন্য পদের উপ-নির্বাচনের দিকে দৃষ্টি দিয়েছে ইসি। এজন্যই মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে ওই তথ্য চাওয়া হয়েছে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মোরশেদ আলমের পাঠানো এক নির্দেশনায় পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের শূন্যপদ থাকলে তা জানাতে বলা হয়।
এতে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে কিন্তু নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি এমন কোনো পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের শূন্যপদ থাকলে লিখিতভাবে জানাতে হবে। একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে শূন্য ঘোষণা সংক্রান্ত পত্রটিও সংযুক্ত করতে হবে।
এদিকে রোববার (৯ এপ্রিল) উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন শূন্য পদে উপ-নির্বাচনের বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয় ইসি থেকে।
উপজেলা সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ১৩ অনুসারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের শূন্য পদে উপ-নির্বাচন ( সংলগ্নী-১) অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আগামী ২৫ মে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এতে প্রার্থিতা বিষয়ক অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে উল্লিখিত সময়সূচি অনুযায়ী বিধি ১১-১৯ অনুসারে মনোনয়নপত্র গ্রহণ, বাছাই, বাছাইছে মনোনয়নপত্র গ্রহণ বা বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দ সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে বলেও চিঠিতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও বাছাইয়ে মনোনয়নপত্র গ্রহণ বা বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের জন্য, বাছাইয়ের জন্য নির্ধারিত তারিখের পরবর্তী ০৩ (তিন) দিন সময় প্রদান করতে হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি জারি এবং তারিখসমূহ স্থানীয় পর্যায়ে প্রচারের ব্যবস্থা করার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরাসরি মনোনয়নপত্র দাখিলের পাশাপাশি অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে বলেও জানানো হয়েছে চিঠিতে।
এই নির্বাচনের জন্য রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ৮ অনুসারে সংশ্লিষ্ট সিনিয়র/জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার এবং সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে বলেও চিঠিতে বলা হয়েছে।
আর ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন শূন্য পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠান সংক্রান্ত আলাদা চিঠিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ধারা ২০ এবং স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর বিধি ১০ অনুসারে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন শূন্য পদে উপ-নির্বাচন (সংশটি-১) অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আগামী ২৫ মে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট করতে ইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই চিঠিতেও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ন্যায় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, বাছাই ও আপত্তি নিয়ে নির্দেশনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।