স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকা প্রতীক দেবে না আওয়ামীলীগ।
সম্পাদকীয়
এডভোকেট মোহাম্মদ এনামুল হক আদালত বার্তাঃ২৩ জানুয়ারি ২০২৪।
আইন সংশোধন করে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন পদ্ধতি চালু করেছিল আওয়ামী লীগ। আট বছরের ব্যবধানে সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে ক্ষমতাসীন দলটি। আইনগতভাবে না হলেও এখন দলীয়ভাবে দলীয় প্রতীকের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে তারা। ২০১৫ সালে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন পদ্ধতি চালুর পর থেকে তৃণমূলে দলীয় কোন্দল ও সহিংসতা দেখা দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত এসব দ্বন্দ্ব-কোন্দল ও সহিংসতা ঠেকাতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকা না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে বক্তব্য রাখা অধিকাংশ সদস্যের দাবির আলোকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবারকার উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার অভিমত দিয়েছে কার্যনির্বাহী কমিটি। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় জানানো হবে।
এদিকে বৈঠকে অংশ নেওয়া পাঁচ সদস্য বলেছেন, শুধু উপজেলা নয়, আগামীতে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কোনও পর্যায়ে দলীয় প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। দুই-একদিনের মধ্যে স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলেও উল্লেখ করেন একাধিক নেতা।
স্থানীয় সরকারের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনে চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে ভোট করার বিধান আছে। এছাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান তিন পদেই দলীয় প্রতীক ব্যবহারের বিধান রয়েছে।
কোন্দল ও সহিংসতা ঠেকাতে স্থানীয় সরকারে দলীয় মার্কা না দেওয়ার অভিমত দেন নেতারা। একই সঙ্গে তারা বলেন, কদিন আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় তৃণমূলে বিভেদ তৈরি হয়েছে। এখন স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দিলে অন্যরা স্বতন্ত্র ভোট করবে। এতে বিভেদ আরও বাড়বে। বরং উন্মুক্ত করে দেওয়াই ভালো হবে।
জবাবে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, মার্কা না দিলেই যে গণ্ডগোল হবে না, তা নয়। দেখ তোমরা কী করবা, মার্কা দিও না। আমি মনোনয়ন দেবো না, আমারও ঝামেলা কমে গেলো।
তিনি বলেন, আপাতত স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। এতে ভোট উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক হবে। যিনি জনপ্রিয় প্রার্থী তিনিই জয়ী হয়ে আসবেন। বিষয়টি নিয়ে দলের মনোনয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হবে বলে জানান তিনি।