1. multicare.net@gmail.com : আদালত বার্তা :
২০০ বছরের ইতিহাস ‘মিষ্টির রাজা’ টাঙ্গাইলের চমচম - আদালত বার্তা
সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দেড় মাস পর সুপ্রিম কোর্টে শুরু হচ্ছে নিয়মিত বিচারকাজ অনলাইনে জমির মালিকানা বের করার সহজ উপায় যেসব কাগজপত্র না থাকলে হারাতে পারেন আপনার জমির মালিকানা!সতর্ক করল নতুন ভূমি আইন বাংলাদেশিদের জন্য শ্রীলঙ্কায় প্রবেশে নতুন নিয়ম, ১৫ অক্টোবর থেকে কার্যকর রোববার থেকে নতুন সূচিতে চলবে মেট্রোরেল জামিন হওয়ার পর এক ক্লিকেই আদেশ চলে যাবে কারাগারে: আইন উপদেষ্টা বিগত ১১৭ বছরের সব দলিল অনলাইনে যাচ্ছে, ভূমি মালিকদের করনীয়  এমপি-মন্ত্রীরা পালাননি, প্রমাণ ১২০ জনের গ্রেপ্তার উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে প্রচণ্ড গোলাগুলি; জনমনে আতঙ্ক মেট্রোরেল ১ ও ৫ উত্তর লাইনের কাজ দ্রুত শুরু করতে জাইকার আহ্বান

২০০ বছরের ইতিহাস ‘মিষ্টির রাজা’ টাঙ্গাইলের চমচম

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৩২০ বার পড়া হয়েছে

২০০ বছরের ইতিহাস ‘মিষ্টির রাজা’ টাঙ্গাইলের চমচম

নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তা : ফেব্রুয়ারি ১০,২০২৪
২০০ বছরের ইতিহাস ‘মিষ্টির রাজা’ টাঙ্গাইলের চমচম
‘মিষ্টির রাজা’ টাঙ্গাইলের চমচম। ছবি : প্রতিনিধি
ঐতিহ্য আর বাংলার লোক-সংস্কৃতি ইতিহাসের উত্তরাধিকার টাঙ্গাইল জেলা। ঐতিহ্যবাহী এ জনপদের লোক-ঐতিহ্য নিয়ে প্রবাদে বলা হয়- ‘চমচম, টমটম ও শাড়ি, এই তিনে টাঙ্গাইলের বাড়ি।’ টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচমের কথাতো সবারই জানা। কেবল নামেই নয়, আকৃতি আর স্বাদ-গন্ধেও এই মিষ্টি সেরাদের সেরা। তাইতো পোড়াবাড়ির চমচমকে বলা হয় ‘মিষ্টির রাজা’। এই চমচম পেয়েছে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি। আনন্দিত ব্যবসায়ী ও চমচম প্রেমীরা।

জানা যায়, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ীর চমচমের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আনুমানিক প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো ইতিহাস। দশরথ গৌড় নামের এক ব্যক্তি ব্রিটিশ আমলে আসাম থেকে টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর তীরবর্তী সদর উপজেলার পোড়াবাড়িতে আসেন। তিনি যমুনার পানি ও গরুর খাঁটি দুধ দিয়ে প্রথমে চমচম তৈরি শুরু করেন। পরে সেখানেই মিষ্টির ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে পোড়াবাড়িতে প্রায় অর্ধশত চমচম তৈরির কারখানা গড়ে ওঠে। এখন আর পোড়াবাড়ীর সেই জৌলুস আর নেই। বর্তমানে টাঙ্গাইল মিষ্টিপট্টি হিসেবে খ্যাতি পাওয়া শহরের পাচঁআনী বাজরের মিষ্টির দোকানগুলোতেও চমচম তৈরি ও বিক্রি হচ্ছে।

এখানকার প্রতিটি মিষ্টির দোকানেই এখন নির্ভেজাল পোড়াবাড়ির চমচম পাওয়া যায়। এই পাঁচআনি বাজারে প্রায় অর্ধশত মিষ্টির দোকান রয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানেই এখন গড়ে উঠেছে চমচমের দোকান। চমচমের গড়ন অনেকটা লম্বাটে। হালকা আঁচে পোড় খাওয়া বলে রঙটা তার গাঢ় বাদামি। বাইরে থেকে দেখতে অনেকটা পোড়া ইটের মতো। বাইরেটা একটু শক্ত হলেও এর ভেতরের অংশ একেবারে নরম আর রসে টইটম্বুর। লালচে গোলাপি আভাযুক্ত ভেতরের নরম অংশের প্রতিটি কোষ কড়া মিষ্টিতে পূর্ণ। ঘন রস আর টাটকা ছানার গন্ধমাখা এ মিষ্টির স্বাদ অতুলনীয়। সুস্বাদু চমচম তৈরির মূল উপাদান দুধ, চিনি, পানি, সামান্য ময়দা ও এলাচ দানা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চমচম একটি উপাদেয় মিষ্টান্ন, যা যে কোনো বয়সের লোকের কাছে লোভনীয়। বিয়ের অনুষ্ঠান, পূজা, জন্মদিনে, পরীক্ষায় ফলাফল, চাকরির প্রমোশন, নির্বাচনে জয়ী, নতুন চাকরি, শ্বশুরবাড়ি বা আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার সময় এই চমচম দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় এখনো সর্বমহলে প্রচলিত। মিষ্টির দোকানে প্রতিদিন তৈরি হয় পোড়াবাড়ির চমচম। বেশিরভাগ দোকানের মালিক নিজেরাই এ চমচম তৈরি করেন। আবার তাদের কাজের সহায়তার জন্য রয়েছে একাধিক সহযোগী।

চমচমের কারিগররা জানান, চরাঞ্চল থেকে যে সমস্ত গাভীর দুধ আসে, সেগুলো অনেক ভালো। আর পানিরও একটা বিষয় আছে। দুধ, পানি ও কারিগরের সমন্বয়েই এই মিষ্টির স্বাদ হয়। মিষ্টিগুলো খুবই প্রাকৃতিক। মিষ্টি তৈরিতে কোনো ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না।

বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন দেশে এই পোড়াবাড়ির মিষ্টির সুনাম রয়েছে। বড় বড় মিষ্টির দোকানগুলোতে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ থেকে ১০ মণ চমচম তৈরি হয়। বর্তমানে মিষ্টি শিল্পে টাঙ্গাইলের ঘোষ ও পাল সম্প্রদায় বংশানুক্রমিকভাবে নিয়োজিত আছে। তবে দে, নাগ ইত্যাদি উপাধিধারী অনেকেও মিষ্টান্ন তৈরিতে নিয়োজিত হয়েছেন। টাঙ্গাইলের মোদক উপাধি প্রাপ্তরাও মিষ্টি শিল্পের সঙ্গে জড়িত। আর জেলার পরিচিতি নির্ধারক চমচমের পাশাপাশি এখন রসগোল্লা, আমৃত্তি, জিলাপি, সন্দেশ, দানাদার, দই, খির, রসমালাই, কালোজাম, খাজা, বাতাসা, কদমা, নই টানা ইত্যাদি মিষ্টিও মন ভিজিয়েছে খাদ্য রসিকদের। কিন্তু টাঙ্গাইলের মিষ্টি মানেই পোড়াবাড়ির চমচম।চমচম তৈরি করছেন কারিগররা।

টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকারের ভৌগলিক নিদের্শক ইউনিট ভৌগলিক নিদের্শক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন ২০১৩ অনুয়ায়ী চলতি বছরের (৯ জানুয়ারি) টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচমকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ স্বীকৃতি পাওয়ায় খুশি চমচম ব্যবসায়ীরা। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করছেন এর ফলে টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম আরও প্রসারিত হবে। জেলার অর্থনৈতিক খাতকে সুরক্ষিত রেখেছে এই চমচম। আর এই সুস্বাদু চমচম তৈরির কাজে জড়িত রয়েছেন শত শত কারিগর। আগুনের তাপে তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণেই এগিয়ে চলছে চমচমের দীর্ঘ পথচলা।

নিজেদের তৈরি চমচম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় খুশি কারিগররাও। বর্তমানে চমচম বিক্রি হচ্ছে মান ভেদে তিনশ’ থেকে চারশ’ টাকা কেজি দরে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা লোকজন ছুটে আসেন মিষ্টির দোকানগুলোতে ঐতিহ্যবাহী চমচমের স্বাদ নিতে।

ঢাকা থেকে আসা রহিম মিয়া সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “টাঙ্গাইলের চমচম খেতে খুব স্বাদ সবার মুখে মুখে শুনেছি। তাই আজ পোড়াবাড়ির চমচম খেতে এসেছি। খেয়ে খুবই মজা পেয়েছি। পোড়াবাড়ির চমচমের স্বাদ অন্য কোনো মিষ্টির সঙ্গে তুলনা চলে না।”

মিষ্টি তৈরির কারিগর হরি লাল ঘোষ বলেন, “আমাদের পোড়াবাড়ির চমচমে ভেজাল কোনো কিছু যুক্ত করা হয় না। খাটি দুধ, ছানা ও ময়দা দিয়ে পোড়াবাড়ির চমচম তৈরি করা হয়। এ জন্য এতো স্বাদ। আমাদের চমচমের সুনাম সারা দেশেই রয়েছে। কয়েকদিন আগে স্বীকৃতি পেয়েছি এতে আমরা অনেক খুশি। সরকারের কাছে দাবি বিদেশে এই চমচম রপ্তানি করার ব্যবস্থা করলে আমাদের বেচা-বিক্রি আরও বৃদ্ধি পাবে। তখন আমরা আরও বেশি বেশি মিষ্টি তৈরি করতে পারব।”

শহরের পাঁচআনী বাজারের পলাশ মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক গৌরাঙ্গ কর্মকার সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সারা দেশে আমাদের মিষ্টির সুনাম রয়েছে। ‘মান ও গুণগতভাবে আমাদের মিষ্টির সুনাম রয়েছে। এই মিষ্টির টাঙ্গাইলের ঐতিহ্য বহন করে। তাই আমরাও সেই ঐতিহ্য রক্ষায় মিষ্টির মান অনেক ভালো করি। মিষ্টির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। টাঙ্গাইলের চমচম জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে, এতে আমরা অনেক খুশি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি মিষ্টি যেন বিদেশে রপ্তানি করতে পারি সেই ব্যবস্থা করা হোক।”

টাঙ্গাইল জেলা রেস্তোরাঁ ও মিষ্টি ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি স্বপন ঘোষ সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমার বাবা ১৯৩৯ সাল থেকে মিষ্টির ব্যবসা শুরু করে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট