
আজ সকাল ৬.১৫ মিনিটে আবার ভূমিকম্প
নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তাঃ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ১৫ মিনটে এ কম্পন অনুভূত হয়। ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার এ তথ্য জানিয়েছে
ভূমিকম্পের গভীরতা ভূপৃষ্ঠ থেকে ২৭ কিলোমিটার, উৎপত্তি টঙ্গী থেকে ২০ কিমি পূর্বে। যার মাত্রা ছিল ৪.১।
তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি
অতি সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। একটির পর একটি ঝাঁকুনি অনেককে আতঙ্কিত করে তুলেছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এগুলো কি বড় ভূমিকম্পের ‘সিগন্যাল’? নাকি সাধারণ আফটারশক? ভূমিকম্পের কারণ কী, কেন বারবার এমন কম্পন হচ্ছে—এসব নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন।
ঢাকায় ঘন ঘন ভূমিকম্প— কীসের ইঙ্গিত
ঢাকা ভূমিকম্প-সংবেদনশীল অঞ্চলে অবস্থান করায় ছোট-বড় কম্পন নতুন নয়। কিন্তু কম সময়ের মধ্যে অনেকগুলো ভূমিকম্প কয়েকটি ইঙ্গিত দেয়—
ভূগর্ভে চাপ (Stress) জমছে: টেকটনিক প্লেটের সরে যাওয়া বা চাপ বৃদ্ধির ফলে ভূগর্ভে শক্তি জমতে থাকে। এই চাপ দীর্ঘদিন জমে বড় ধরনের ভূমিকম্পের কারণ হতে পারে।
আফটারশকও হতে পারে: একটি বড় ভূমিকম্পের পর কিছুদিন ছোট ছোট কম্পন স্বাভাবিক। তবে এগুলো যদি একই উৎস থেকে আসে, সেগুলোকে আফটারশক ধরা হয়।
আবার ‘ফোরশক’ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে: কখনো ছোট কম্পনগুলো বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাসও হতে পারে, যাকে ফোরশক বলা হয়। তবে কোন কম্পন ফোরশক আর কোনটি আফটারশক—এটি আগে থেকে নিশ্চিতভাবে বলা যায় না।
ভূমিকম্প কেন হয়? (কারণ ও ব্যাখ্যা)
টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষ
পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ঠ কয়েকটি বড় প্লেট দিয়ে তৈরি। এই প্লেটগুলো সবসময় নড়াচড়া করে। বাংলাদেশের নিচ দিয়ে ভারতীয় প্লেট ও বার্মা প্লেট সরে যায় এবং একে অপরকে ঠেলে দেয়। ফলে বিশাল চাপ তৈরি হয় এবং সেই চাপ হঠাৎ মুক্ত হলেই হয় ভূমিকম্প।
ফল্ট লাইনের নড়াচড়া
বাংলাদেশের কাছে কয়েকটি প্রধান ফল্ট লাইন আছে—
ডাউকি ফল্ট
চিটাগাং-টাইগ্রিস ফল্ট
মিয়ানমারের সক্রিয় ফল্টগুলো
এই ফল্টগুলোতে সামান্য নড়াচড়াও ঢাকায় কম্পন অনুভব করতে দেখা যায়।
ভূগর্ভে শক্তি সঞ্চয়
দীর্ঘদিন ধরে চাপ জমে থাকলে তা একসময়ে শক্তি হিসেবে বের হয়—এটাই ভূমিকম্প। ঢাকা ভূমিকম্পপ্রবণ তিনটি জোনের মাঝামাঝি অবস্থান করায় ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।
এগুলো আফটার শক নাকি ফোরশক?
বিশেষজ্ঞদের মতে—
এগুলো আফটারশক হলে উৎস হবে একই জায়গায়।
ফোরশক হলে পরবর্তী সময়ে বড় কম্পন হতে পারে।
তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—
এমন বারবার ঝাঁকুনি মানেই ভূগর্ভে সক্রিয়তা বাড়ছে।
যেকোনো সময় বড় কম্পনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা তাই ‘সতর্কতা’ ও ‘প্রস্তুতি’ বাড়ানোর পরামর্শ দেন।
ঢাকায় ভূমিকম্পের প্রভাব কেন বেশি হয়?
অতিরিক্ত ঘনবসতি
দুর্বল বিল্ডিং
অপরিকল্পিত নগরায়ণ
নরম মাটি (soft soil) — যেখানে কম্পন কয়েকগুণ বাড়তে পারে
তাই ঢাকায় ৫ মাত্রার ভূমিকম্পও বড় ক্ষতি করতে পারে।
কী করা উচিত
ভবনের ভূমিকম্প-সহনক্ষমতা পরীক্ষা
বাসা ও অফিসে নিরাপদ কোণ (Safe Zone) চিহ্নিত করা
ভারী জিনিস দেয়ালে আটকানো
জরুরি কিট প্রস্তুত রাখা
ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত না হয়ে ‘ডাক–কভার–হোল্ড’ নিয়ম মানা।