ঐতিহ্যবাহী সেই আলাউদ্দিন সুইটমিট
বিশেষ প্রতিবেদন,আদালত বার্তাঃ২৬ জুন ২০২৫
ঐতিহ্যবাহী সেই আলাউদ্দিন সুইটমিট ------
১৯৮৮-১৯৮৯ সালে বিচিত্রা পত্রিকার পুরো একটি পাতাজুড়ে থাকত ভীষণ মজার এক কার্টুন। এই কার্টুনের চরিত্রগুলোর পাশে লেখা থাকতো মিষ্টি মিষ্টি নানা কথা। হ্যাঁ,এভাবেই পত্রিকায় আলাউদ্দিনের মিষ্টির বিজ্ঞাপন দেয়া হতো।
আশির দশকে ঢাকাকে উপস্থাপনের হাতেগোনা কিছু আইকনিক প্রতিষ্ঠানের একটি "আলাউদ্দিন সুইটমিট" বাংলাদেশে ব্র্যান্ড মিষ্টির পথ দেখানো সেই আলাউদ্দিন সুইটমিট এখন ঢাকার বুকে কোথায় আছে সেই মিষ্টির দোকান,বেচা-বিক্রি কেমন ?
আলাউদ্দিনের মিষ্টির মান ছিলো স্বাস্থ্যকর এবং অন্যতম সেরা। কোয়ালিটি এবং বৈচিত্র্য থাকায় অনেকেই এসব মিষ্টি দেশের বাইরে নিয়ে যেতেন। দেশের বাইরেও আলাউদ্দিনের মিষ্টির জনপ্রিয়তা ছিল।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়,দেড়শো বছরের কিছু বেশি আগে ভারতের লখনৌ থেকে পুরান ঢাকার চকবাজারে আসেন মিষ্টি ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন হালওয়াই। তিনি ১৮৯৪ সালে গড়ে তোলেন আলাউদ্দিন সুইটমিট,যা ছিলো ঢাকা শহরের বুকে প্রথম খ্যাতি ছড়ানো মিষ্টির দোকান। কেবল মিষ্টির ব্যবসাই নয়,আলাউদ্দিন সুইটমিটের নাম জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গেও।
ঐতিহ্যবাহী আলাউদ্দিন সুইটমিটের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য মিষ্টি - রসগোল্লা_স্পঞ্জ রসগোল্লা_
লালমোহন_চমচম_গুড়ের সন্দেশ_কালোজাম
_মালাইকারী_মালাইচম_রাজভোগ_দই_হাফসি হালুয়া_দুদিয়া সন্দেশ_কাঁচা সন্দেশ_দই_রসমালাই ইত্যাদি। রোজার সময় চকবাজার শাখায় পাওয়া যেত আলাউদ্দিন স্পেশাল জাফরানী সরবত। এ ছাড়াও রমজানে ইফতারের আয়োজনে আলাউদ্দিনের থাকতো। কিমা পরোটা_টানা পরোটা_জালি কাবাব_
বিফ স্টিক_চিজ লরেন্স_চিকেন স্টিক_চিকেন নাগেট আর পনির সমুচা। এর মধ্যে কিমা পরোটা আর চিস লরেন্সের চাহিদা ব্যাপক ছিল।
আলাউদ্দিন সুইটস লাচ্ছা সেমাই ঈদের সময় সৌদি আরব,মালয়েশিয়া,সিঙ্গাপুর এবং ভারতসহ আরো বেশ কিছু দেশে রপ্তানি করা হত।
১৫৬ বছরের পুরনো এই দোকানটি আজকের দিন পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশের সকল সামাজিক-
রাজনৈতিক উত্থান পতনের সাক্ষী। ভারত-পাকিস্তান ভাগের পর ঢাকা ও লখনৌ এর মাঝে প্রথম স্থাপিত হয় সীমানার কাঁটাতার,কিন্তু তা আলাউদ্দদিন সুইটস-এর ব্যবসার জন্য তেমন কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।