মিথ্যা মামলা ও অযৌক্তিক গ্রেফতার ঠেকাতে বিধান করছে সরকার : আসিফ নজরুল
নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তাঃ২৬ জুন ২০২৫
প্রচুর মিথ্যা মামলা হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। সরকার মিথ্যা মামলা এবং এসব মামলায় গ্রেফতার থামাতে নতুন বিধান করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, মিথ্যা মামলা এবং এসংক্রান্ত গ্রেফতার সমাজের সব স্তরে উদ্বেগ তৈরি করেছে। নির্দোষ মানুষকে আসামি করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে সরকার মিথ্যা মামলা এবং এসব মামলায় গ্রেফতার থামাতে নতুন বিধান করছে সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগ অ্যান্ড ক্রাইমের আয়োজনে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
মিথ্যা মামলা নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা।
এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হলে তিনি নিজেই পরামর্শ চান। আসিফ নজরুল বলেন, ‘এসব মামলা ও গ্রেফতার বন্ধ করতে কিছু বিধান করছি। আপাতত সেটা প্রকাশ করছি না। অন্তত এসব মামলা যেন কমে আসে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
সেমিনারে বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস এতে সভাপতিত্ব করেন। সংলাপে ইউএনওডিসির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের উপপ্রতিনিধি ড. সুরুচি প্যান্ট স্বাগত বক্তব্য দেন এবং বাংলাদেশ অফিসের প্রধান ফেলিপে রামোস সংলাপের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন।
বিচার বিভাগ নিয়ে সরকারের উদ্যোগ প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা প্রথমবারের মতো ছেলে শিশুদের যৌন নির্যাতনকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছি। আমরা গুমের ওপর একটি নতুন আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় আছি এবং আমরা এটিকে গুমসংক্রান্ত কনভেনশনের সঙ্গে যতটা সম্ভব সামঞ্জস্যপূর্ণ করার চেষ্টা করছি।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিচার বিভাগের মামলার চাপ কমাতে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। আগে যেখানে প্রতি জেলায় একজন লিগ্যাল এইড অফিসার থাকতেন, এখন সেখানে তিনজন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
সরকার ছোটখাটো মামলা যেমন—পারিবারিক বিরোধ, পাঁচ লাখ টাকার নিচের চেকসংক্রান্ত মামলা কিংবা পিতা-মাতার ভরণপোষণ সংক্রান্ত মামলায় প্রথমে মধ্যস্থতাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এতে সময় ও খরচ উভয়ই কমবে বলে মনে করেন উপদেষ্টা।
তিনি জানান, সরকার ইতোমধ্যে মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারের সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে, যা প্রায় ৩ লাখ মানুষের জীবনকে বিপদে ফেলেছে। আগামী ছয় মাসে ২০ হাজার মামলা প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।’
আইন উপদেষ্টা জানান, বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা বাড়াতে বিচারকদের সম্পদ ঘোষণাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, নিম্ন আদালতের বিচারকদের জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং আদালত কর্মী নিয়োগের জন্য কেন্দ্রীয় নিয়োগ ব্যবস্থা চালু হয়েছে