মোবাইল নেটওয়ার্কের ঝামেলা শেষ! ওয়াইফাই দিয়েই সিমে কল সম্ভব

নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তা : ২৩৫সেপ্টেম্বর ২০২

দেশের অন্যতম মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে ভয়েস-ওভার-ওয়াইফাই (VoWiFi) কলিং সেবা। এখন আপনার ফোনের সিম ব্যবহার করেই ওয়াইফাই থেকে সরাসরি যে কারো সিমে কল দেওয়া যাবে — এবং যাকে কল করা হবে, তার ফোনে অবশ্যই ওয়াইফাই অন থাকতে হবে এমনটি বাধ্যতামূলক নয়। কলগুলো HD ভয়েস কোয়ালিটিতে শোনা যাবে এবং দুর্বল সেলুলার সিগন্যাল থাকলেও কল করা সম্ভব হবে। নিচে বিস্তারিত জানুন — কিভাবে চালু করবেন, চার্জ কেমন হবে, কোথায় কাজ করবে এবং অন্যান্য জরুরি তথ্য।

VoWiFi কী এবং কীভাবে কাজ করে?

VoWiFi বা Voice over Wi-Fi হলো এমন একটি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে আপনার ভয়েস ডাটা ইন্টারনেট (ওয়াইফাই) ব্যবহার করে অপারেটরের নেটওয়ার্কে পৌঁছে এবং রিসিভারের সিম-নেটওয়ার্কে রিলে হয়ে সাধারণ কলের মতো পৌঁছে যায়। ফলে কলের শব্দ অনেক সময় বেশি পরিষ্কার (HD) হয় যেখানে সেলুলার সিগন্যাল দুর্বল সেখানেও কল করা যায়। চালু হলে রিসিভারের কাছে কল একটি স্বাভাবিক ফোন কল হিসেবেই যাবে — তাদের ফোনে আলাদা কোনো অ্যাপ লাগবে না।

কিভাবে আপনার ফোনে VoWiFi/ওয়াইফাই কলিং চালু করবেন

১. ফোনের সেটিংসে যান।
২. Mobile network বা Connections/ Network & internet অপশন ঢুঁকুন (ফোন ব্র্যান্ড অনুযায়ী নাম লঘুভাবে ভিন্ন হতে পারে)।
৩. আপনার সিম স্লট (সিম ১/সিম ২) সিলেক্ট করুন যেখানে বাংলালিংক সিম আছে।
৪. নিচে গেলে Wi-Fi calling নামের অপশন দেখতে পাবেন — সেটি অন করুন।
৫. Wi-Fi Calling Preference-এ গিয়ে নেওয়া দুইটি অপশনের মধ্যে Wi-Fi Calling preferred নির্বাচন করলে ফোন প্রথমে ওয়াইফাই ব্যবহার করেই কল ট্রান্সমিট করবে; না হলে সেলুলার কলিং-এ ফিরে যাবে।
৬. একবার চালু হলে ফোনের স্ট্যাটাসবারে বা কল স্ক্রিনে “Wi-Fi +” বা Wi-Fi কল আইকন দেখা যাবে — যেহেতু কল এখন ওয়াইফাই ব্যবহারের মাধ্যমে হচ্ছে।

কি ধরনের কানেকশন/এলিয়ায় কাজ করবে?

বর্তমানে বাংলালিংক এই সেবাটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে ঢাকাসহ কিছু বড় শহরে চালু করেছে। পুরো দেশে কার্যকর হওয়ার জন্য অপারেটরকে বিভিন্ন ISP (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার) এবং নেটওয়ার্ক পার্টনারদের সঙ্গে চুক্তি করতে হয় — ফলে শুধুমাত্র সেই ISP-গুলোর নেটওয়ার্কে গেলে কাজ করবে। অর্থাৎ সব ওয়াইফাই-ই VoWiFi সাপোর্ট করবে না; পরবর্তীতে ধাপে ধাপে সারাদেশে সেবা প্রসারিত করা হবে।

কি-কী সুবিধা পাওয়া যাবে?

দুর্বল সেলুলার কভারেজের এলাকায় (বেসমেন্ট, রুরাল অঞ্চল) পরিষ্কার HD কলিং।

কল কাটা-ছেঁড়া কম হওয়া।

রিসিভারের কাছে আলাদা কোনো অ্যাপ বা ওয়াইফাই চালু থাকার বাধ্যবাধকতা নেই — তারা ক্লासিক কল পাবেন।

কলের খরচ:

VoWiFi ব্যবহার করলে আলাদা করে কল রেট আরোপ করা হবে না—অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপারেটরের নর্মাল ভয়েস রেটই প্রযোজ্য হয়। অর্থাৎ আপনি যদি বাংলালিংকের মাধ্যমে কল করেন, তবে সাধারণত আপনার ব্যালান্স থেকে স্বাভাবিক কল চার্জ কেটে নেওয়া হবে (অপারেটরের ট্যারিফ অনুযায়ী)। ওয়াইফাই-এর নিজের ইন্টারনেট ডাটা আলাদা নেওয়া হবে না, কারণ ভয়েস ট্রাফিক অপারেটরের নেটওয়ার্কে রিলে হয়ে যায়; তবে পাইলট সিস্টেম ও অপারেটরের নীতিমালার উপর ভিত্তি করে কিছু ভিন্ন নিয়ম থাকতে পারে — অফিসিয়াল ঘোষণায় সেটা চিহ্নিত করা হবে।

কি কি সতর্কতা জানবেন?

সমস্ত ওয়াইফাই নেটওয়ার্কই VoWiFi সাপোর্ট করে না — আপনার ISP এবং অপারেটরের মধ্যে সমঝোতা থাকা জরুরি।

অফিসিয়াল চালু না হলে বা আপনার ফোনয়ের সাপোর্ট না থাকলে অপশন দেখা নাও যেতে পারে।

HD কলিং ভালো হলেও কোল ডিপেন্ড করে আপনার ওয়াইফাই কনসিসটেন্সি-র ওপরে — দুর্বল ওয়াইফাই হলে কলে ল্যাগ বা কন্ফার্ট হতে পারে।

সেবার চার্জিং পলিসি জানার জন্য অপারেটরের অফিসিয়াল তথ্য দেখুন।

কারা সুবিধা পাবে? (উদাহরণ)

বাসায় বা বেসমেন্ট অফিসে যেখানে সেলুলার সিগন্যাল দুর্বল।

শহরের ব্যস্ত বা উচ্চ-বিল্ডিং এলাকায় যেখানে কভারেজ জটিল।

যে ব্যবহারকারীরা কল-কোয়ালিটি-এ বিশেষ গুরুত্ব দেন এবং HD ভয়েস চান।

উপসংহার

VoWiFi চালুর খবরটি গ্রাহকদের জন্য প্রাপ্ত সুবিধার দিক থেকে আনন্দের—বিশেষত যেখানে সেলুলার নেটওয়ার্ক দুর্বল। তবে ব্যবহার শুরু করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন আপনার ফোন ও সিম কোম্পানি (বাংলালিংক) সেবা সাপোর্ট করে কি না; এবং নিজ দেশের অপারেটরের কতটা ট্যারিফ নীতি প্রযোজ্য হবে সে সম্পর্কে অফিসিয়াল নির্দেশনা দেখুন। প্রয়োজনে অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার থেকে বিস্তারিত জেনে নিন এবং আপনার ফোন সেটিংস ঠিকভাবে কনফিগার করুন — তাহলেই সহজে ও পরিষ্কার কণ্ঠে কল চালাতে পারবেন