1. multicare.net@gmail.com : আদালত বার্তা :
হয়রানি ঠেকাতে সমন-ওয়ারেন্ট যাবে অনলাইনে - আদালত বার্তা
শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বান্দরবান সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি। বাংলাদেশ জাতীয় লীগ ৫৬ বছর পর মিলছে ইসির নিবন্ধন, ফিরে পেতে চায় লাঙ্গল প্রতীক জিটিওকে প্রধান উপদেষ্টা আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা যেকোনো সময় তুলে নেওয়া হতে পারে। মানবতার মর্ম এক, ধর্ম হোক ভালোবাসার, বিভাজনের নয়। উৎসব হোক একতার, বৈরিতার নয়। সুখবর দিল ফেসবুক মাত্র একটি শর্ত মানলে নতুনরাও পাবেন মনিটাইজেশন হাসিনার সাথে যোগাযোগ ঠেকাতে বন্ধ হচ্ছে দুটি অ্যাপ মেট্রোরেলের র‍্যাপিড পাস কার্ড এবার থেকে অনলাইনেই রিচার্জ করতে পারবেন যাত্রীরা। ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ঢাকা ফেসবুকের নতুন আপডেটে মাত্র ২টি শর্ত পূরণ করলেই পাবেন কনটেন্ট মনিটাইজেশন মোবাইল নেটওয়ার্কের ঝামেলা শেষ! ওয়াইফাই দিয়েই সিমে কল সম্ভব

হয়রানি ঠেকাতে সমন-ওয়ারেন্ট যাবে অনলাইনে

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

হয়রানি ঠেকাতে সমন-ওয়ারেন্ট যাবে অনলাইনে

 নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তাঃ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ 

ফৌজদারি মামলায় সমন ও ওয়ারেন্ট (গ্রেপ্তারি পরোয়ানা) জারি নিয়ে হয়রানির শেষ নেই। বছরের পর বছর ভুয়া ওয়ারেন্ট (গ্রেপ্তারি পরোয়ানা) জারির মাধ্যমে হয়রানি চলছে। সাধারণ নিরীহ মানুষ এর শিকার হচ্ছেন। এ ধরনের ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর হাজতবাসের ঘটনাও ঘটছে। অর্থ ও সময় চলে যাচ্ছে জীবন থেকে। ভুয়া ওয়ারেন্টে ভুক্তভোগীর সংখ্যাও কম নয়। এ ধরনের ওয়ারেন্ট জারির সঙ্গে অনেক সময় আদালতের কর্মচারীর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও জড়িত থাকেন।

অন্যদিকে, কোনো মামলায় সমন জারি নিয়ে চলে ইঁদুর-বিড়াল খেলা। কোনো আদালত থেকে সমন জারি হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছানো নিয়ে নাটকীয়তার শেষ থাকে না। অনেকগুলো ধাপ অতিক্রম করে সমন পৌঁছানোয় কোথায় যে ত্রুটি থাকে, তা অদৃশ্য রয়ে যায়। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এবার সমন ও ওয়ারেন্ট পাঠানোর শত শত বছরের প্রচলিত পুরাতন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। পরিবর্তনের পর সমন ও ওয়ারেন্ট পাঠানো হবে অনলাইনে।

জানা গেছে, ফৌজদারি মামলা ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনার জন্যই ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে সমন-ওয়ারেন্ট পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর এজন্য পুলিশের ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (সিডিএমএস) বিচারকদের ও সরকারি আইন কর্মকর্তাদের সরাসরি প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার কাজ চলছে। সিডিএমএস পুলিশের একটি কেন্দ্রীয় ডিজিটাল ডাটাবেজ যেখানে মামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকে।

সিডিএমএসে প্রবেশের বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দফায় দফায় মিটিং হয়েছে। দুই দপ্তরের কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। সফটওয়্যারে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন শেষ হলে শিগগির উচ্চ আদালত ও অধস্তন আদালতের বিচারকরা পুলিশের সিডিএমএসে প্রবেশ করে মামলার এফআইআর, তদন্তের অগ্রগতি, চার্জশিটসহ যাবতীয় নথি দেখার সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস, সলিসিটর অফিসের কর্মকর্তারাও পুলিশের সিডিএমএসে প্রবেশ করতে পারবেন।

বিচারক ও আইন কর্মকর্তারা সরাসরি এফআইআর, তদন্ত প্রতিবেদন, চার্জশিট দেখার সুযোগ পাবেন। সমন ও ওয়ারেন্ট জারির পর বিচারকরা তা সরাসরি সিডিএমএসে দাখিল করবেন। ফলে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ সহজেই সমন-ওয়ারেন্ট হাতে পেয়ে যাবে। এতে করে ভুয়া ওয়ারেন্টে হয়রানি কমবে। এ ছাড়া সমন পাঠানোর যে হয়রানি, তাও বন্ধ হবে। এ ছাড়া অনেক সময় আসামিপক্ষ থেকে জাল তথ্য দাখিল করে জামিন নেওয়ার যে অপচেষ্টা করেন, তাও বন্ধ হবে।

জানা গেছে, সর্বশেষ গত ১৫ সেপ্টেম্বর পুলিশের সিডিএমএসে প্রবেশের বিষয়টি নিয়ে আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুই দফায় পৃথক বৈঠক হয়। প্রথম দফায় আইন উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আইন মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়। এরপর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়।

বৈঠকে আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে পুলিশের সিডিএমএসে প্রবেশের বিষয়ে ঐকমত্য হয়। এখন সিস্টেম রি-অ্যারেঞ্জের কাজ চলছে। যাদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে, তাদের জন্য আইডি ও পাসওয়ার্ড তৈরি করা হচ্ছে।

জানতে চাওয়া হলে অতিরিক্ত আইজিপি (পুলিশ মহাপরিদর্শক) খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সমন ও ওয়ারেন্ট জারির ডিজিটালাইজেশনের প্রক্রিয়া চলছে। সিডিএমএসে প্রবেশের ব্যাপারে দুপক্ষই ঐকমত্যে পৌঁছেছে। এখন টেকনিক্যাল বিষয়গুলো নিয়ে কাজ চলছে। দ্রুতই এ কাজ শেষ হবে। এ প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন হলে বিচার প্রার্থীদের হয়রানি ও দুর্ভোগ লাগব হবে।’

সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ তৈরির যেসব পদক্ষেপ, তার মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে এটি। এই পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে সবারই ভোগান্তি কমবে। বিচারকাজ গতিশীল হবে। সবাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির আওতায় আসবে। এটি হবে নতুন বাংলাদেশ গঠনের মূর্ত প্রতীক।’

আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিচারক ও আইন কর্মকর্তারা পুলিশের সিডিএমএসে প্রবেশের সুযোগ পেলে সমন জারির ক্ষেত্রে যে জটিলতা রয়েছে তা দূর হবে। বর্তমানে সমন জারির পর তা পাঠাতে অনেকগুলো স্তর রয়েছে। ফলে সহজেই সমন চেপে রাখা যায়, এটা বন্ধ হবে। মামলার ফরোয়ার্ডিংয়ে জালজালিয়াতি বন্ধ হবে। ভুয়া ওয়ারেন্ট জারি বন্ধ হবে। মামলার তদন্তের অগ্রগতি নজরদারিতে থাকবে

বিচারাধীন মামলায় কোন কোর্টে কতজন সাক্ষী হাজির করা হচ্ছে, কতজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে, সাক্ষী ফিরে যাচ্ছে কি না—সবকিছুই একটা মনিটরিংয়ের ভেতর থাকবে। ফলে পুলিশ-প্রসিকিউশনের মধ্যে সাক্ষী হাজির করা নিয়ে যে টানাপোড়েন, তা দূর হবে। সংশ্লিষ্ট সবাই জবাবদিহির আওতায় আসবে।

জানা গেছে, ভুয়া ওয়ারেন্ট ঠেকাতে ২০২০ সালে সাত দফা নির্দেশনা দিয়ে তা অনুসরণ করতে বলেছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু কাজ হয়নি। এখনো ভুয়া ওয়ারেন্টে হয়রানি চলছেই। গত ২৮ জুলাই ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালত এমন একটি ভুয়া ওয়ারেন্ট জারির ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। গত বছরের ১৮ জুন সুজন কুমার বসুর নামে ম্যাজিস্ট্রেটের জাল স্বাক্ষর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়।

পরে দেখা যায়, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রিসিভ সংক্রান্ত কোনো রেজিস্ট্রারে উপস্থাপনকারী কর্মচারীর নাম লেখা বা স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি। ভুয়া পরোয়ানা সৃষ্টিকারী প্রতারক ব্যক্তিরা আদালতের নাম ও সিল ব্যবহার করে জালজালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ইস্যুর ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ জনগণকে হয়রানি করে। সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়াসহ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।

শুধু সুজন কুমারই নন, ভুয়া ওয়ারেন্টে হয়রানির শত শত ঘটনা ঘটছে। সাভারের আশুলিয়ায় একটি জমি দখলের জন্য আওলাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে পরপর পাঁচটি ভুয়া ওয়ারেন্ট পাঠিয়ে গ্রেপ্তার রেখে টানা ৬৮ দিন হাজতবাসে বাধ্য করা হয়।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট