রেলপথে ঈদযাত্রার চতুর্থ দিনে এসে ছাদ ভর্তি যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ছে ট্রেন।
ডেস্ক নিউজ আদালত বার্তা :২০ এপ্রিল ২০২৩।
রেলপথে ঈদযাত্রার চতুর্থ দিনে এসে যাত্রীর চাপে ভেঙে পড়েছে সব ধরনের ব্যবস্থাপনা। ১৭, ১৮ ও ১৯ এপ্রিল সকল ব্যবস্থাপনা ঠিকঠাক থাকলেও আজ বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সবকিছু হয়ে গেছে ওলট-পালট। ট্রেনগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। টিকিট ছাড়াই ছাদে চড়ে ভ্রমণ করছেন শত শত যাত্রী। এতে করে টিকিট কেটে ট্রেনে ওঠা যাত্রীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। ট্রেনগুলোও ছেড়ে যেতে বিলম্ব করছে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে দেখা যায়, গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোতে যাত্রীদের ব্যাপক চাপ। এক একটি ট্রেন আসার সঙ্গে সঙ্গে সেটি যাত্রীতে পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। ভেতরে ঢোকার জায়গা না পেয়ে শত শত যাত্রী উঠে পড়ছেন ট্রেনের ছাদে। আবার ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার সময় অনেক যাত্রীকে দরজায় ঝুলতেও দেখা গেছে।
রেলওয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা চেষ্টা করেও ট্রেনের ছাদে ওঠা সব যাত্রীদের নামাতে পারেননি। ফলে ছাদে যাত্রী নিয়েই গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যেতে হয়েছে ট্রেনগুলোকে।
রেলওয়ে সূত্র বলছে, আগামীকাল শুক্রবার থেকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও পোশাকসহ বিভিন্ন কারখানার ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় যাত্রীদের এই চাপ তৈরি হয়েছে।
রাত ৮টায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ৩ নং প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করে পঞ্চগড়গামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস। প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই যাত্রীতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় ট্রেনটি। শত শত যাত্রীতে ভরে যায় পুরো ছাদ। এরপর আনসার ও রেলওয়ে পুলিশ লাঠি চার্জসহ বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও মাত্র গুটি কয়েক যাত্রীকে ছাদ থেকে নামতে পেরেছেন। পরে প্রায় ৫০ মিনিট বিলম্বে ছাদে যাত্রীসহ প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যায় ট্রেনটি।
ট্রেনের ছাদে উঠে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। ছবি: সাড়ে ৮টায় ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসে পঞ্চগড়গামী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস। সেটিতেও একই অবস্থা দেখা যায়। ছাদ ও ভেতরে কানায় কানায় পূর্ণ যাত্রী নিয়ে রাত ৯টা ১৫ মিনিটে বিলম্বে ছেড়ে যায় ট্রেনটি।
এদিকে ট্রেনের ছাদে ওঠা এসব যাত্রীদের বেশির ভাগেরই টিকিট ছিল না। ভেতরে প্রবেশ করা অনেক যাত্রীরও টিকিট ছিল না। ফলে আগাম টিকিট কাটা অনেক যাত্রী টিকিট থাকার পরও যেতে পারেননি। তিন স্তরের টিকিট চেকের ব্যবস্থা থাকার পরও টিকিটবিহীন এসব যাত্রীরা অনেকটা জোর করেই প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ের স্টেশন ব্যবস্থাপক মাসুদ সারোয়ার, ‘আমার আর বলার কিছুই নেই। অসহায় হয়ে গেছি। আগেই বলা হয়েছিল এই চাপের কথা। বিশেষ করে গার্মেন্টসগুলো ছুটি হওয়াতে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি বলেন, হাজার হাজার জনস্রোত তৈরি হলে সেটা আটকানো যায় না। তিনি আহত হয়েছেন, পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিলেন তাঁরা আটকাতে পারেননি কাউকেই।