আইনজীবীদের প্রিয় ব্যক্তি এডভোকেট আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইস্রাফিল আর নেই।
এডভোকেট একেএম আমিনউদ্দীন, বিশেষ সংবাদাতা, আদালত বার্তা :১৮জুন ২০২৩।
আ
লহাজ্ব মোহাম্মদ ইস্রাফিল, এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।
পিতা- মরহুম আলহা্জ্ব দুদু মিয়া ও মাতা- রত্নগর্ভা মরহুম চম্পাবিবি। গ্রাম-নলগড়িয়া, পো: ভাকুর্তা,থানা-সাভার,জেলা-ঢাকা। বর্তমানে, ৩ পুরানা পল্টন,ঢাকা। বাবা ছিলেন নলগড়িয়া গ্রামের একমাত্র মুসলিম জমিদার ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানসম্পন্ন পীরে কামেল।
তিনি খাজুরিয়া প্রাইমারী স্কুল, ভাকুর্তা,সাভার থেকে ৫ম শ্রেণি, কলাতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণি, ওয়েস্ট এন্ড হাই স্কুল তেকে ৮ম শ্রেণি হতে পড়েন এবং ’৬০ সনে ম্যাট্রিকুলেশন করেন। ’৬২ সনে ঢাকা কলেজ থেকে এইচ.এস.সি, ’৬৪ সনে জগন্নাথ কলেজ বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ’৬৮ সনে সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএল,বি ডিগ্রি অর্জন করেন। একই সনে ঢাকাবিশ্ব বিদ্যারয থেকে ম্যানেজমেন্টে এম.কম. করেন। ২০১২ সনে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল.এল.এম.ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ’৭৩ সনে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল থেকে সনদ নিয়ে ৮ আগষ্ট ’৭৩ ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন। ’৭৮ সনে বাংলাদেশ সুপ্রীম আইনজীবী সমিতির সদস্য হন।
তিনি আইনজীবীদের সরাসরি ভোটে ১৯৯৯-২০০০ সনে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সর্বাধিক ভোট পেয়ে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ২০০৪ সনে সর্বাধিক ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৮ সনে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও পৃথকীকরণের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিকোতে ইন্টারন্যাশানাল বার এসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের একমাত্র ডেলিগেট হিসেবে ঢাকা বারের প্রতিনিধিত্ব করে মেরিউটে ৬টি সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশে উক্ত বিষয়ে মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি ঢাকা বার এসোসিয়েশন,ইনকাম ট্যাক্স বার এসোসিয়েশন, ইন্টারন্যাশানাল বার এসোসিয়েশন, ল’ এশিয়া, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট এর আজীবন সদস্য ছিলেন।
তিনি সোনালী ব্যাংক, অগ্রনী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্যানেল ল’ ইয়ার ছিলেন । সোসাইটি ফর দ্যা লিগ্যাল রাইটস এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং অনির্বাণ প্রগতি সংঘের সভাপতি ছিলেন।
তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যান,বার কাউন্সিল ট্রাইবুন্যালের চেয়ারম্যান,এবং এনরোলমেন্ট কমিটি,ফাইন্যান্স কমিটি,হিউম্যান রাইটস কমিটি, রোল এন্ড পাবলিকেশন কমিটির সদস্য হয়ে সুষ্ঠু ভাবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বৃহত্তর ঢাকা জেলা আইনজীবী কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। নিজ পিতা ও মাতার নামে প্রতিষ্ঠাকরেছেন আলহাজ্ব দুদু মিয়া ও চম্পা বিবি ফাউন্ডেশন, তিনি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান। তিনি একনাগাড়ে নলাগড়িয়া জামে মসজিদ, মসজিদুল আকসা, সাভার বাজার ডোমরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি।
তিনি নলাগড়িয়া পুরিয় টেকনিক্যাল মাদ্রাসার ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট।পুরানা পল্টন মহিলা কলেজের গভনিং বড়ির সভাপতি। সারাদেশের আইনজীবীদের কল্যাণে আইনজীবি উন্নয়ন কমিটি গঠন করেছেন। সারাদেশে বিনা পারিতোষিকে আইন সহায়তা প্রদানের জন্য “সোসাইটি ফর দি লিগ্যাল রাইটস” গঠন করেছেন। যার চেয়ারম্যান তিনি নিজে ছিলেন । অফিস ৩ পুরানা পল্টন,ঢাকা । অন্যতম উপদেষ্টা ও দাতা সদস্য কলাতিয়া ডিগ্রি কলেজ, কেরাণীগঞ্জ, খাগুরিয়া জুনিয়র হাই স্কুল,সাভার, কাইসার চর নূরিয়া মাদ্রাসা, সাভার। প্রধান উপদেষ্টা হিতৈষী ফাউন্ডেশন হাই স্কুল,
তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রেসিডিয়াম মেম্বার। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের আইন সহায়তা কমিটির চেয়ারম্যান। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ছিলেন।
১৯৭১ সনে মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের পোষাক ও ইউনিফরম দিয়ে সহায়তা করেছিলেন। তিনি ২০০৭ সনে ১/১১ সংগঠিত হলে নেতানেত্রীদের আইন সহায়তা কমিটির সভাপতির দায়িতাব পালন করেন।তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ৪ বিঘা জমি এলোটমেন্ট,৩০ লক্ষ টাকা অনুদান,একটি নোয়া গাড়ী ক্রয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ইউএনডিপির আওতায় ১০ কোটি টাকায় সাইবার ক্যাপের মাধ্যমে কম্পিউটারাইজ করেন।
তাঁর ডাক নাম ইউসুফ। তিনি ’৭৪ সনে সিলেট নিবাসী ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান মরহুম আনোয়ার হোসেনের মেয়ে মোসাম্মাৎ জুলেখাকে বিয়ে করেন। স্ত্রী জুলেখা মৃত্যুবরণ করেছেন। একমাত্র মেয়ে এডভোকেট রুবায়েত মুনমুন এম.কম. এলএল.বি, ঢাকা জজ কোর্টে প্র্যাকটিসরত । তার স্বামী আতিকুল হক শামীম আমেরিকা প্রবাসী,বিশিষ্ট সমাজসেবক ও ইউথসিনিয়র রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস-চেয়ারম্যান ।
তিনি ৬ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে ৫ম। ১.বড় ভাই আলহাজ ফজলুল হক ,ডি.সি. সিরাজগঞ্জ হিসেবে অবসর নেন। ২. মরহুম আলহাজ¦ মো: তাজুল ইসলাম আইনজীবী ছিলেন। ৩. মরহুম আলহাজ¦ এ.কে.এম. মমতাজ উদ্দিন, আইনজীবী, ঢাকা বারের সেক্রেটারী, সভাপতি ও বার কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। ৪. মোহাম্মদ সোলায়মান ,আইনজীবী, ৫ তিনি নিজে, ৬. এরহুম এ.কে.এম.আমান উল্লাহ ,আইনজীবী ছিলেন, সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান।
তিনি শুধু দিয়েই গিয়েছেন। তিনি দেওয়াতেই আনন্দ ও সুখ পান বলতেন।।তিনি বহুবার হজ পালন করেছেন। তার মৃত্যুতে আইনজীবী সমাজে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি শোক বার্তা জানিয়েছেন।