সব যদি বাহিরের লোকেই করে দিল তাহলে আমরা কি করছি?
এডভোকেট মোহাম্মদ এনামুল হক
সম্পাদকীয়, আদালত বার্তাঃ৩০ মার্চ ২০২৪।
চীনের ইঞ্জিনিয়ারেরা আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর কাজ করে দিল, জাপানের ইঞ্জিনিয়ারেরা আমাদের স্বপ্নের মেট্রোরেল তৈরি করলো, রাশিয়ার বিজ্ঞানী আর ইঞ্জিনিয়ারেরা আমাদের আরেক স্বপ্নের মেগা প্রজেক্ট রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বানাচ্ছে, কোরিয়ান ইঞ্জিনিয়ারেরা পার্বতিপুর খনি থেকে কয়লা উত্তোলণ করে দেয়, ফ্রান্সের কোম্পানি আর তাদের বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়ারেরা আমাদের টাকায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট বানালো এবং তারাই আমাদের হয়ে উড্ডয়ন করে দিল।
৫৩ বছরেও আমরা বিজ্ঞানী কিংবা ইঞ্জিনিয়ার বানাতে পারলাম না যারা একটা বড় বড় সেতু বানাতে পারে, যারা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট বানানো দূরে থাকে তদারকি করতে পারে, স্যাটেলাইট বানাতে পারে? না পারলে এইসবের পেছনে যেই অর্থ ব্যয় করেছি সেই অর্থ ব্যয় করে যদি আমরা বড় বিজ্ঞানী আর ইঞ্জিনিয়ার বানানোর কয়েকটি বিশ্বমানের ইনস্টিটিউট তৈরী করতে পারতাম তাহলে দেশে উচ্চ মানের মানুষের সংখ্যা বাড়তো যার ফলে দেশের অন্যান্য ক্ষেত্র বিশেষ করে সুশাসনেও প্রতিফলন ঘটতো। আমরা আগে মানুষ তৈরির কারখানা বানিয়ে মানুষ না তৈরী করে অন্য দেশের মানুষ দিয়ে এইসব বানাচ্ছি।
ভারত কি তা করেছে? তারা আগে মানুষ বানিয়েছে আর নিজেদের মানুষ দিয়ে ইনফ্রা স্ট্রাকচার তৈরী করছে এবং করেছে। এতে অর্থ সাশ্রয় হয়েছে, আরো বেশি এক্সপার্ট মানুষ তৈরী হয়েছে। কেন এখন পর্যন্ত একটা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট সাইন্সের মত প্রতিষ্ঠান বানাতে পারলাম না। ভারত ২৪ টার মত আইআইটি বানিয়েছে আমরা কেন আইআইটির মত একটি প্রতিষ্ঠানও বানাতে পারলাম না। কেন আমাদের সুপার ধনীরা একটি টাটা ইনস্টিটিউট ফর ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের মত একটা প্রতিষ্ঠান বানাতে পারলো না?ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডঃ কামরুল হাসান মামুন কথা গুলো এমনি ভাবে বলছিলেন ।
সদিচ্ছা, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা, বাস্তবমুখী শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে মানব সম্পদ গড়ে তোলার আগ্রহের অভাব রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিকল্পনামাফিক সময়োপযোগী ভাবে তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সঠিক তদারকির অভাবের ফলে আজ আমরা স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও যেমনটি সুফল আশা করেছিল দেশ ও জাতি তেমনটি আমরা অর্জন করতে পারিনি।
সময় এসেছে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদেরকে সঠিক পদক্ষেপ সঠিক সময়ে গ্রহণ করে দেশ ও জাতির সার্বিক মঙ্গল ও কল্যাণে বিশ্বের বুকে স্মার্ট জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে গড়ে তুলতে হবে এদেশকে। এ দেশর জন্য যারা প্রাণ দিয়ে আমাদেরকে দিয়ে গেছে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ।
স্বাধীনতার মান অক্ষুন্ন রাখতে তাদের দেখে যাওয়া স্বপ্ন আমাদেরকে বাস্তবায়ন করতে সম্মিলিতভাবে এদেশকে গড়ে তুলতে হবে এই হোক ৫৪ বছরের স্বাধীনতা দিবসের অঙ্গীকার।