কেমন হতে পারে আগামীর নির্বাচন ?
নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তা : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নির্বাচনী ভাবনা, কেমন হতে পারে দৃশ্যপট
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তীব্র হয়ে উঠছে নির্বাচনী আলোচনা। চায়ের দোকান থেকে আড্ডাখানা— সবখানেই চলছে নির্বাচনী জপ। বিশেষ করে সম্প্রতি রয়টার্সকে দেওয়া সেনাপ্রধানের এক সাক্ষাৎকারের পর ভিন্ন মাত্রা জুড়েছে আলোচনায়। সেদিন সেনাপ্রধান জানিয়েছিলেন, ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। নিউইয়র্কে অবস্থানরত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন, যদিও তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করেননি। সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পাওয়ার পর নির্বাচন নির্ধারণের কথা বলেছেন। যখন নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, তখন আলোচনা হচ্ছে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে। ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ গত দুই মাস ধরে একেবারেই নীরব। যদিও সজীব ওয়াজেদ জয় সংস্কার ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা বলেছেন, দলের সভাপতি পদে কোনো ভারপ্রাপ্ত নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সাধারণ সম্পাদক কোথায় আছেন, তা কেউ জানে না।
এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কি পরিবর্তন আসবে? তবে দলটির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আগ্রহের অভাব দেখা যাচ্ছে। দেড় দশক ধরে গুরুত্বহীন নেতারা কোনো উদ্যোগ নেবেন কি-না, সেটাও প্রশ্ন। সরকারের সমন্বিত কোনো সিদ্ধান্ত এখনো প্রকাশ্যে আসেনি। এক উপদেষ্টা মন্তব্য করেছেন, আওয়ামী লীগ কি মতপ্রকাশের নামে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে? তিনি দাবি করেছেন— আওয়ামী লীগ ফ্যাসিজম ও গণহত্যায় জড়িত, এবং তাদের বিচার প্রক্রিয়া চলছে। তাই, তিনি মনে করেন, তাদের রাজনীতি করার সুযোগ নেই, তবে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য জরুরি।
এদিকে বিএনপি ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা ক্ষমতায় গেলে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন করবে। সূত্র বলছে— যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোকে বিএনপি গুরুত্ব দেবে। তবে তাদের জাতীয় সরকারে জামায়াতকে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে থাকা দীর্ঘদিনের জোট এখন আর নেই। তবে যদিও মাঝে মধ্যে যোগাযোগ ছিল তাদের। কিন্তু ৫ আগস্টের পর বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে, এবং উভয় দলের নেতারা একে অপরকে প্রকাশ্যে সমালোচনা করছেন।
আওয়ামী লীগ ফ্যাসিজম ও গণহত্যায় জড়িত, এবং তাদের বিচার প্রক্রিয়া চলছে। তাই, তিনি মনে করেন, তাদের রাজনীতি করার সুযোগ নেই, তবে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য জরুরি
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা
অপর দিকে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য হবে না ধরে নিয়ে নিজেদের আগামী দিনের রাজনীতির প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। ইসলামপন্থি দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে, কিন্তু সেখানেও কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের চিন্তা জামায়াতের ভেতরে-বাইরে আগে ছিল, কিন্তু এখন তা মিইয়ে গেছে। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে আসছে ইসলামী শিবির, ফলে ছাত্রদলের সঙ্গে তাদের দূরত্ব বাড়তে পারে। কোথাও কোথাও তা দৃশ্যমানও হয়েছে।
ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া নেতারা নতুন দল গঠনের চিন্তা করছেন কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। সমন্বয়করা জানান, এখনই নতুন দলের জন্য উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা নেই, তবে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দল গঠনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। রাজনৈতিক দল গঠন একটি বড় উদ্যোগ, এবং এ বিষয়ে তাদের তৎপরতা চলছে।
বিভিন্ন বিষয় এখনও স্পষ্ট নয়, তবে রাজনীতির রূপ পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে। অনেক পুরনো সমীকরণ বদলে যেতে পারে। ৫ আগস্টের ঘটনা প্রমাণ করেছে, রাজনীতির পরিস্থিতি যে কোনো সময় বদলে যেতে পারে, সেটাও উপলব্ধি করা প্রয়োজন।