ভিসানীতির জবাবে শেখ হাসিনা
বিশ্বে আরও দেশ আছে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করবো।
নিজস্ব প্রতিবেদক আদালত বার্তা :৩ মে ২০২৩।
বিশ্বে আরও দেশ আছে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করবো মার্কিন ভিসানীতির জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পৃথিবীটা অনেক বড়। ২০ ঘণ্টা আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে কোনো দেশে আমাদের না গেলেও চলবে। আটলান্টিকের এপারে অনেক মহাসাগর ও আশপাশে অনেক দেশ আছে। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা নিজের পাওয়ারে চলবো। কারো মুখাপেক্ষী হয়ে না। কে আমাদের ভিসা দেবে না, কে আমাদের স্যাংশন দেবে- তা নিয়ে মাথাব্যথা করে কোনো লাভ নাই। ওই আমেরিকা না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না।
শনিবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নিজস্ব রাজনৈতিক কার্যালয় উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগকে চিরতরে উৎখাত করা এত সহজ নয়। কেউ ধ্বংস করতে পারেনি, আগামীতেও পারবে না। আমাদের একমাত্র শক্তি হচ্ছে দেশের জনগণ এবং দলের কর্মীরা। যারা দলের জন্য বারবার মৃত্যুর ঝুঁকিকে আলিঙ্গন করেছে।
তিনি বলেন, দেশ ও মানুষের স্বার্থে গড়ে ওঠা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের মানুষের উন্নয়ন হয়। এটা আজ প্রমাণিত। আওয়ামী লীগ মানুষের সংগঠন। মানুষের কল্যাণে কাজ করে। জাতির পিতা আমাদের সেটা শিখিয়েছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের আমলের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে জানান, সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে যোগাযোগব্যবস্থায়। ২০০৮ সালের বাংলাদেশের সঙ্গে ২০২৩ সালের তুলনা করলেই সেটা দেখা যাবে। এক দিনে একশ সেতু উদ্বোধন পৃথিবীতে কোনো সরকার করতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ শুধু রাজনীতিক দলই নয়, এটি হচ্ছে একটি ইনস্টিটিউটের মতো। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এদেশের উন্নতি হয়, এটাই বাস্তব। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়েই বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলে স্বল্প সময়ের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের কল্যাণ হয়। মানুষের কল্যাণে সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। আমরা যেসব কাজ করি, আওয়ামী লীগ যেসব পরিকল্পনা নেয়, প্রকল্প নেয়, তা সুপরিকল্পিতভাবেই করা হয়। আমাদের মাটি, মানুষ, পরিবেশ, দেশের ভৌগলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক অবস্থা, সবকিছু বিবেচনা করেই প্রকল্প গ্রহণ করি। তার ফলে প্রতিটি প্রকল্পই সাফল্য অর্জন করে। মানুষ তার সুফল পায়।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই দেশের মানুষের উন্নতি হয়েছে। দেশে স্থিতিশীলতা না থাকলে এ উন্নতি হতো না। গত ১৪ বছর ধরে সবক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সবক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেওয়া টেলিভিশনে বসে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে যাচ্ছে। কে কী বলল আমরা দেখব না। আমরা কাজ করে যাবো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। আমরা এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধাগুলোকে সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়ে দেশে-বিদেশে রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার চালানোর জন্যে বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করেন।
বিশ্বে আরও দেশ আছে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করবো
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। বিএনপি-জামায়াত জোট ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা ব্যবহার করে আমাদেরই বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব অপপ্রচারে কান না দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময়ই জনগণের কল্যাণে কাজ করে। দল যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই দেশের উন্নয়ন হয়। আমরা বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছি এবং একে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে মন্দা চলছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গ্যাস-তেল-কয়লার দাম বেড়ে গেছে, কয়লা পাওয়াই যাচ্ছে না। আমাদেরও পেতে সমস্যা হচ্ছে। জানি গরমে সমস্যা হচ্ছে। আমরা তো লোডশেডিং দূরই করে দিয়েছিলাম। করোনা আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে এ সমস্যা হতো না।
স্বাধীনতাবিরোধী, খুনি ও অগ্নিসন্ত্রাসীরা আবার যাতে ক্ষমতায় ফিরতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, খুনি, স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীরা যাতে আর কখনোই ক্ষমতায় ফিরতে না পারে তা নিশ্চিত করুন। তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তথাকথিত আন্দোলনের নামে বহু মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাস্তার পাশের হাজার হাজার গাছ উজাড় করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলন করে আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা এত সোজা নয়। তিনি বলেন, তবে তারা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসলে চক্রান্ত করতে পারবে, ষড়যন্ত্র করতে পারবে যেমন ২০০১ সালে চক্রান্ত করে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেয়নি তার ভোগান্তি এ দেশের মানুষের হয়েছে। তাই মানুষকেও সজাগ থাকতে হবে। আবার তারা ভোগান্তিতে পড়বে, নাকি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিজয়ের পতাকা সমুন্নত রেখে উন্নয়নের পথে অপ্রতিরোধ্য গতিতে সামনে এগিয়ে গিয়ে গড়ে তুলবে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, এমপি,বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু,এমপি,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ।