অতিরিক্ত স্কিন টাইমিং তথা টিভি, ফোন অতিরিক্ত স্পর্শ শিশুদের কথা বলা শেখার গতিধীর করে দিতে পারে- বলেছে গবেষণা
বিশেষ প্রতিবেদন, আদালত বার্তাঃ১৫ মার্চ ২০২৫।
বর্তমানে প্রযুক্তি বিস্তারের এ যুগে শিশুরা জন্মের পর থেকেই ডিজিটাল স্ক্রিন এর সাথে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল স্ক্রিন তথা টিভি, ফোন, ট্যাব যেন তাদের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু, কখনো কি ভেবে দেখেছেন কি এই অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমিং শিশুদের বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে কোনো নেতিবাচক প্রভাব রাখছে কি না? সম্প্রতি এ সম্পর্কিত একটি আন্তর্জাতিক গবেষণায় উঠে এসেছে স্ক্রিনের সামনে বেশি সময় কাটালে শিশুদের কথা বলা শেখা তথা ভাষা শেখার প্রক্রিয়া ধীর গতির হয়ে যায়।
গবেষণার উদ্দেশ্যে, ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বের ২০ টির ও বেশি দেশের ১,৮৭৮ জন ১২ থেকে ৪৮ মাস বয়সী শিশুর দৈনন্দিন স্ক্রিন ব্যবহারের ওপর গবেষণা চালিয়েছেন। দেখা গেছে, বেশিরভাগ শিশুই দিনে এক ঘণ্টার বেশি সময় স্ক্রিনের সামনে কাটায়। গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুরা সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় টিভি ও মোবাইলের সামনে, যেখানে বিনোদনমূলক ভিডিও, গান ও কিছু শিক্ষামূলক কনটেন্ট দেখা হয়। দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিন এর সাথে যুক্ত থাকার ফলে তাদের বাস্তব জীবনের যোগাযোগের সময় কমে যাচ্ছে, কথা বলার প্রয়োজন হচ্ছে না ফলস্বরূপ নতুন শব্দ শেখার হার বা প্রয়োজনীয়তা কমে যাচ্ছে। ফলে তাদের ভাষা বিকাশ ধীরগতির হয়ে পড়ছে।
তবে নিয়ন্ত্রিত এবং অভিভাবকদের সাথে উপভোগ করা স্ক্রিন টাইম শিশুদের ভাষা শেখার ক্ষেত্রে বাজে প্রভাবে ফেলে না। বরং, গবেষণায় দেখা গেছে, যদি বাবা-মা বা পরিবারের বড়রা শিশুদের সঙ্গে বসে স্ক্রিনের কনটেন্ট দেখেন এবং সেটি সহজভাবে ব্যাখ্যা করেন, তাহলে সেটি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। একইভাবে, নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাসও শিশুর ভাষা শেখার দক্ষতা বাড়ায়।
যেহেতু ডিজিটাল স্ক্রিনের যুগে বাচ্চাদের একেবারে প্রযুক্তি থেকে দূরে রাখা সম্ভব নয় তাই তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া গেলে স্ক্রিন এর সাথে কাটানো সময় ক্ষতির বদলে উপকারীও হতে পারে। তাই অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে, যাতে শিশুদের স্ক্রিনের বাইরে বাস্তব জগতের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ে, আর তাদের ভাষা শেখার পথ আরও প্রশস্ত হয়।