উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে প্রচণ্ড গোলাগুলি; জনমনে আতঙ্ক
নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তাঃ১০ অক্টোবর ২০২৫
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে থেমে থেমে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে বলে স্থানীয় সীমান্তের বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এতে সীমান্ত এলাকার মানুষরা নির্ঘুম ও আতঙ্কে রাত কাটিয়েছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় টহলরত বিজিবি সদস্যরা /ফাইল ছবি
কক্সবাজারে উখিয়ার কয়েকটি সীমান্ত এলাকার পাশাপাশি বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে থেমে থেমে ভেসে আসছে গোলাগুলির প্রচন্ড শব্দে সীমান্ত এলাকা জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে থেমে থেমে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে বলে স্থানীয় সীমান্তের বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এতে সীমান্ত এলাকার মানুষরা নির্ঘুম ও আতঙ্কে রাত কাটিয়েছেন।
এ ঘটনায় মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে মো. ইয়াসের নামের এক রোহিঙ্গা যুবক আহত হয়েছেন। তিনি উখিয়া ১২ নম্বর শিবিরের বাসিন্দা।
সীমান্তের সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসা-আরএসওর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, রাতে ইউনিয়নের ধামনখালী, বালুখালী, রহমতের বিল, নলবনিয়া ও আঞ্জুমানপাড়া সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রবল গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। একইসঙ্গে পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা থেকেও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “মিয়ানমারের ভেতরে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে আরাকান আর্মির ভয়াবহ গোলাগুলি চলছে। সীমান্তের এপারের মানুষ উদ্বেগ আর আতঙ্কে রাত জেগে কাটিয়েছেন। এ সময় মিয়ানমার থেকে আসা গুলিতে এক রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন।”
স্থানীয় সাংবাদিক কামরুউদ্দিন মুকুল ও আলাউদ্দিন সিকদার জানান, রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে ধামনখালী সীমান্ত পয়েন্টে একটানা গুলির শব্দ শোনা যায়। দীর্ঘদিন শান্ত থাকা সীমান্তে হঠাৎ এমন গোলাগুলিতে এলাকাবাসীর মধ্যে ভয় ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে রাতভর ঘরে অবস্থান নিয়ে সতর্ক থাকেন।
মধ্যরাত দুইটা পর্যন্তও থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছিল বলে জানিয়েছেন।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) উখিয়া ৬৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন বলেন, “গোলাগুলির শব্দ শোনার পর সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিজিবি সদস্যরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ভেতরে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।”
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সম্প্রতি মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীকে পরাজিত করে আরাকান আর্মি সীমান্তের ২৭২ কিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর থেকে সীমান্তের ভেতরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আরসা, আরএসওসহ রোহিঙ্গাদের কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেড়ে গেছে। গত কয়েক সপ্তাহে এসব গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিকবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে ৪ অক্টোবর রাতেও নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম চাকমাপাড়া সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরে অনুরূপ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, যা কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী ছিল