1. multicare.net@gmail.com : আদালত বার্তা :
শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৬:৫৩ অপরাহ্ন

পাড়ায়-মহল্লায়, অফিস-আদালতে—সবখানে প্রশ্ন একটাই—কী হচ্ছে অক্টোবরে? দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি: উত্তেজনা ও শঙ্কার অক্টোবর।

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: সোমবার, ২ অক্টোবর, ২০২৩
  • ১৬১ বার পড়া হয়েছে
  1. পাড়ায়-মহল্লায়, অফিস-আদালতে—সবখানে প্রশ্ন একটাই—কী হচ্ছে অক্টোবরে?

দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি: উত্তেজনা ও শঙ্কার অক্টোবর।
নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তা : ০২ অক্টোবর ২০২৩,
বিরোধীদের নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অগ্রাহ্য করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। নভেম্বরে তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। এই পরিস্থিতিতে রাজনীতির মাঠে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে চলতি অক্টোবর মাস। কারণ, এ মাসেই সরকারের পতন ঘটাতে চায় বিএনপি। অন্যদিকে সরকার চায় কোনোরকমে আন্দোলন সামাল দিয়ে মাসটি পার করতে।

এ জন্য মাসজুড়ে সতর্ক অবস্থানে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সঙ্গে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগও। তবে সব ছাপিয়ে মানুষের চোখ বিএনপির আন্দোলনের দিকে। পাড়ায়-মহল্লায়, অফিস-আদালতে—সবখানে প্রশ্ন একটাই—কী হচ্ছে অক্টোবরে?

অক্টোবরকে যদি রাজনীতির সন্ধিক্ষণ ধরা হয়, তবে তা ঘিরে কঠোর কোনো কর্মসূচি এখন পর্যন্ত দেয়নি বিএনপি। গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে দেশব্যাপী টানা কর্মসূচির অংশ হিসেবে সভা-সমাবেশের পাশাপাশি রোডমার্চ করছে দলটি। গতকাল রোববার ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ পর্যন্ত রোডমার্চ করেছে তারা। আজ সোমবার রাজধানীতে কৃষক সমাবেশ আছে। ৫ অক্টোবর কুমিল্লা-ফেনী-মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোডমার্চের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শেষ হবে। সেখান থেকে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা আসার কথা রয়েছে।

অক্টোবর নিয়ে পরিকল্পনা কী, জানতে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলেছে আজকের পত্রিকা। তাঁরা জানিয়েছেন, ৫ অক্টোবরের পর থেকে খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ঢাকার বাইরে কর্মসূচি দেওয়ার কোনো চিন্তা দলটির নেই। এখন থেকে শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হবে। ১৮, ১৯, ২০ অক্টোবর—এই তিন দিনের যেকোনো এক দিন ঢাকায় মহাসমাবেশের পরিকল্পনা আছে বিএনপির। ওই সমাবেশ থেকে সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে আলটিমেটাম দেওয়া হবে।
‘আগামী দিনে আন্দোলন আরও জোরদার হবে’ জানিয়ে নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি দেশবাসীকে আন্দোলনে শামিল হতে বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

গতকাল বিএনপির ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ রোডমার্চে তিনি বলেন, ‘নিজের ভোট যদি নিজে দিতে চান, তাহলে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে, নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আগামী দিনে এই লড়াই হবে, এই লড়াইয়ে আমাদের জিততে হবে।’

একই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আজকে আমরা রাজপথে নেমেছি। এই জনপ্রতিনিধিবিহীন সরকার যতক্ষণ না পদত্যাগপত্র জমা দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না।’

নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির পাশাপাশি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে আসছিল বিএনপি। চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নেওয়ার সুযোগ চেয়ে আবেদনও করেছিল পরিবার। কিন্তু গতকাল সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর সুযোগ নেই। এর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিকভাবে কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিল সরকার। এই অবস্থায় বিএনপির করণীয় ঠিক করতে গতকাল সোমবার বৈঠক করেছে দলের স্থায়ী কমিটি।

আওয়ামী লীগে ভোটের প্রস্তুতি
সরকারি দল আওয়ামী লীগ এখন নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছে। সভা-সমাবেশ ছাড়া চলতি মাসে চারটি মেগা প্রকল্প উদ্বোধন সামনে রেখে বড় মহড়া দিতে চায় দলটি। ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিন তিনি সড়কপথে মাওয়া যাবেন। সেখানে সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। ২৩ অক্টোবর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের উদ্বোধন করা হবে। ওই দিন মতিঝিলে সুধী সমাবেশ, ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ওই দিন চট্টগ্রামে সুধী সমাবেশ করা হবে। এ ছাড়া মাসের মাঝামাঝি সময়ে গণভবনে নারী সমাবেশ করার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। এ ছাড়া তফসিল ঘোষণার পরে দেশের বিভিন্ন জেলায় নির্বাচনী জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দ্বাদশ নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য বিএনপি নানা ষড়যন্ত্র করছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর নানান কর্মকাণ্ডে দলটির পালে হাওয়া বাড়ছে। কর্মসূচিগুলোতে বড় জমায়েত ঘটানোর মাধ্যমে সবাইকে দেখানো হবে, জনগণ আওয়ামী লীগ ও সরকারের পক্ষে।

অক্টোবর নিয়ে আওয়ামী লীগের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া। আমরা নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকব। সহিংসতার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেখবে। আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব।’ তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের মানুষ কখনো পাত্তা দেয়নি, আর কখনো দেবেও না।

সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য শাজাহান খান বলেন, ‘জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা বিগত দিনে আন্দোলন করেছি, সামনের দিনেও আমরা জনগণের ওপর নির্ভরশীল। বিদেশি চাপ প্রসঙ্গে এই নেতা বলেন, ‘আমরা তো এ পর্যন্ত অনেক বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেছি। কখনো সফল হয়েছি, আবার কখনো কিছুটা হলেও বিফল হয়েছি। একাত্তর সালে যখন আমেরিকাসহ বড় বড় দেশ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, সেটা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মোকাবিলা করেছি।’

বিশ্লেষকদের শঙ্কা
দুই পক্ষের অনড় অবস্থান নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংকীর্ণতার পাশাপাশি সহিংসতার প্রবণতা রয়েছে। এ কারণে নির্বাচনের আগে যখন রাজনৈতিক দলগুলো মুখোমুখি হয়, তখন সেখানে সহিংসতার আশঙ্কা করাটা খুবই স্বাভাবিক।

অক্টোবর মাসকে দেশের রাজনীতির সন্ধিক্ষণ উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহিংসতার সংস্কৃতি বিরাজমান। এ মাসকে রাজনীতির সন্ধিক্ষণ ধরলে সেখানে যদি রাজনৈতিক শক্তিগুলো মুখোমুখি হয়, তাহলে সহিংসতার পূর্বাভাস পাওয়া যায়।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট