সরকারি কর্মকর্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের কার্য সম্পাদন করা, এমপি বা অন্য কারও নির্দেশনা পালন করা নয় বলে মন্তব্য করেছেন-- হাইকোর্ট
নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তা : ১৮ অক্টোবর ২০২৩
সরকারি কর্মকর্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের কার্য সম্পাদন করা, এমপি বা অন্য কারও নির্দেশনা পালন করা নয় বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আদালত আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় কাজের বাইরে অন্যের পা চাটা সরকারের কর্মকর্তার দায়িত্ব না।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) একটি মামলার শুনানির সময় বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট মামলার আইনজীবী ড. বশির আহমেদ।
তিনি বলেন, আজকে নাটের গুরুদাশপুরের এক শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে বরখাস্তের বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার স্বশরীরে হাজির হয়ে আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন।
ড. বশির বলেন, জয় বাংলা রাষ্ট্রীয় স্লোগান। এটা রাষ্ট্রীয় স্লোগান হিসেবে একজন শিক্ষক যে কোনো জায়গায় জয় বাংলা স্লোগান দিতে পারেন। ১৫ আগস্টের শোক দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে ওই শিক্ষক জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছেন। এজন্য তাকে বরখাস্ত করা হয়। আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন আগামী ৭ দিনের মধ্যে এই শিক্ষকের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। এ বিষয়ে আগামী ১১ নভেম্বর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এটি দাখিল করবেন।
এর আগে গত ৩০ আগস্ট নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় শোক দিবসের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ার কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে বরখাস্তের ঘটনায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে তলব করেন হাইকোর্ট। ১৮ অক্টোবর তাকে স্বশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
একইসঙ্গে রাষ্ট্রীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা’ বলার কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে বরখাস্ত করা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় শোক দিবসের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় দরিকাছিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে এমপির নির্দেশে বরখাস্ত করে জেলা শিক্ষা অফিস।
গত ২২ আগস্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. গোলাম নবী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গুরুদাসপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খ. ম. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় এমপি আব্দুল কুদ্দুসের নির্দেশে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে মাসুদুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে তিনি দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ওই শিক্ষকের জবাবের বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠানো হলে তিনি সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন। পরে এ ঘটনা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন বশির আহমেদ। সেই শুনানি করে আদালত প্রথমে রুল জারি করেন। আজকে রুলের শুনানি করে এ রায় দিলেন আদালত।