হাজার হাজার মানুষ বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছে: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তা :২৫ জুলাই ২০২৩।
যুক্তরাষ্ট্র মনে করে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া উচিত। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে অবস্থান নেবে না বলেও জানিয়েছে দেশটি।
গতকাল সোমবার (২৪ জুলাই) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এসব কথা বলেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি একজন বিএনপি কর্মীকে কানাডায় আশ্রয় না দেওয়া এবং অতীতে বিএনপির রাজনৈতিক সহিংসতায় জড়িত হওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন তিনি।
সাংবাদিক বলেন, কানাডার ফেডারেল আদালত বিএনপির সঙ্গে যুক্ত এক কর্মীর আশ্রয় আবেদন খারিজ করে এবং দলটিকে স’ন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। বাংলাদেশের পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিএনপি অতীতে রাজনৈতিক সহিংসতায় জড়িত ছিল, বিশেষ করে ২০১৪ সালে। জাতীয় নির্বাচনের সময় বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিল। এবারও বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল বিএনপির বিরুদ্ধে সহিং’সতা শুরু করার চেষ্টার অভিযোগ করেছে। এই বিষয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কি?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমার পর্যবেক্ষণ হলো আমরা বাংলাদেশ বা বিশ্বের অন্য কোনো দেশের কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষে অবস্থান নিই না। তবে আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া উচিত।
এর আগে একই ব্রিফিংয়ে আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সারা বাংলাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। শান্তিপূর্ণ বিরোধী সমাবেশে হাম”লা হচ্ছে যেখানে হাজার হাজার মানুষ বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মোবাইল ফোন তল্লাশি, গ্রেপ্তার ও হাজার হাজার মামলাসহ বিরোধী সমাবেশে ইন্টারনেট বন্ধের অভিযোগ। এমনকি মৃ”ত বিরোধী নেতারাও বর্তমান সরকারের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। তাহলে যারা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার খর্ব করছে, যুক্তরাষ্ট্র কি তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে?
ম্যাথু মিলার বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ২৪ মে ভিসা নীতিমালা জারি করার সময় স্পষ্ট করে বলেছিলেন যে, এই ভিসা বিধিনিষেধ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য দায়ীদের জন্য প্রযোজ্য হবে। গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে এমন কার্যকলাপের মধ্যে রয়েছে ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার ব্যবহার যাতে জনগণকে তাদের সংগঠনের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করা থেকে বিরত রাখা যায়। এটি রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা মিডিয়াকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখার জন্য পরিকল্পিত যেকোন ব্যবস্থার ব্যবহারও কভার করে।
এ পর্যায়ে সাংবাদিক বাংলাদেশে মানবাধিকার কর্মীদের হুম’কি, হয়’রানি ও বিচারের বিষয়টি সামনে আনেন। তিনি প্রশ্ন করেন, সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৮৬ শতাংশ মানবাধিকার কর্মী বিভিন্ন বাধা ও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন। অর্থ নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে আরেকটি অ”স্ত্র, কারণ তাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে। তাই অনেক আন্তর্জাতিক সাহায্য গ্রহীতা সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানবাধিকার কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না বলে শুনেছি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটা উদ্বেগজনক বলে মনে করেন?
জবাবে, স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বলেন, “সাধারণ নিয়ম হিসাবে, গণতান্ত্রিক সমাজের উচিত প্রত্যেকের স্বাধীনভাবে তাদের ভূমিকা ও দায়িত্ব পালনের ক্ষমতা সমর্থন করা।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা মানবাধিকারের উপর যে কোনো ধরনের বিধিনিষেধের বিরোধিতা করি এবং এই বিষয়ে আমার আর কোনো নির্দিষ্ট মন্তব্য করার নেই।”