1. multicare.net@gmail.com : আদালত বার্তা :
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ: বিরোধিতার পরও আওয়ামী লীগের পথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার - আদালত বার্তা
শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বান্দরবান সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি। বাংলাদেশ জাতীয় লীগ ৫৬ বছর পর মিলছে ইসির নিবন্ধন, ফিরে পেতে চায় লাঙ্গল প্রতীক জিটিওকে প্রধান উপদেষ্টা আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা যেকোনো সময় তুলে নেওয়া হতে পারে। মানবতার মর্ম এক, ধর্ম হোক ভালোবাসার, বিভাজনের নয়। উৎসব হোক একতার, বৈরিতার নয়। সুখবর দিল ফেসবুক মাত্র একটি শর্ত মানলে নতুনরাও পাবেন মনিটাইজেশন হাসিনার সাথে যোগাযোগ ঠেকাতে বন্ধ হচ্ছে দুটি অ্যাপ মেট্রোরেলের র‍্যাপিড পাস কার্ড এবার থেকে অনলাইনেই রিচার্জ করতে পারবেন যাত্রীরা। ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ঢাকা ফেসবুকের নতুন আপডেটে মাত্র ২টি শর্ত পূরণ করলেই পাবেন কনটেন্ট মনিটাইজেশন মোবাইল নেটওয়ার্কের ঝামেলা শেষ! ওয়াইফাই দিয়েই সিমে কল সম্ভব

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ: বিরোধিতার পরও আওয়ামী লীগের পথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ: বিরোধিতার পরও আওয়ামী লীগের পথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আদালত বার্তাঃ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণকে ঘিরে বিতর্ক করলেও বাস্তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই আওয়ামী লীগের দেখানো পথেই হাঁটছে, যা একসময় তারা তীব্রভাবে সমালোচনা করেছিলেন। দায়িত্ব গ্রহণের শুরুতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলেছিলো, পূর্ববর্তী সরকারের ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছিল।

এমনকি ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতিসংঘের কাছে আবেদন করে এলডিসি থেকে উত্তরণের সময়সীমার বিষয়টি স্থগিত রাখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে এতো বিরোধিতার পরেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের নির্ধারিত রূপরেখাতেই হাঁটছে।

আজ নিউইয়র্কে এলডিসি থেকে উত্তরণে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও)’র সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস।

বিরোধিতা ও সমালোচনা

অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারকরা বলছিলেন, ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, এটি স্থগিত করা প্রয়োজন, কর-জিডিপি অনুপাত নেমে গেছে ৭ শতাংশের নিচে, অর্থনীতি ভঙ্গুর, দেশে গাজার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, “ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে এলডিসি তালিকা থেকে উত্তরণে আবেদন করা হয়েছিল। ৭ শতাংশের নিচে নেমে গেছে কর-জিডিপির হার। আরও ঋণ নিতে হলে দেশ বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।”

তিনি আরও মন্তব্য করেন, “অর্থনীতির অবস্থা এতটাই ভঙ্গুর যে গাজার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এজন্য পুনর্বিবেচনা করে পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তৈরির কাজ চলছে। প্রয়োজন হলে জাতিসংঘে আবেদন করে উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে।”

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন সরাসরি বলেছিলেন, “এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন একটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। আমরা ট্র্যাপে পড়েছি।”

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, “আমরা চিন্তাভাবনা করছি। তবে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জগুলো নিতে হবে। অনেক সময় সিদ্ধান্ত নিলে প্রস্তুতি নিতে ভালো হয়। না হলে ব্যবসায়ীরা সবসময় বলে, প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়নি। পেছানোর আবেদন এখনই করা হবে না, এটি নির্ভর করবে প্রস্তুতির ওপর।”

অন্যদিকে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সম্প্রতি জানিয়েছেন, “বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণ তিন বছর পিছিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।”

এমনকি রাজনৈতিক দল বিএনপি প্রকাশ্যেই এলডিসি উত্তরণ স্থগিত রাখার পক্ষে মত দিয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশ এখনো এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের জন্য প্রস্তুত নয়।”

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুও অভিযোগ করেছেন, “বিবিএসকে মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিবছর ৬-৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখাতে হবে। ৩ শতাংশ হলেও বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে এলডিসি উত্তরণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।”

৫ই আগস্টের পর ব্যবসায়ী নেতারাও উত্তরণ কমপক্ষে ৬ থেকে ১০ বছর পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলছেন। ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ ১০ বছর পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। আবার ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশ (আইসিসিবি) আয়োজিত সেমিনারে ব্যবসায়ী নেতারা ছয় বছর সময় বাড়ানোর দাবি তুলেছেন।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ হলে শুল্ক সুবিধা হারিয়ে বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। এছাড়া জলবায়ু অর্থায়ন ও উন্নয়ন সহযোগিতাও কমে আসবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পথেই হাঁটা

কিন্তু বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারও সেই পথেই হাঁটছে যা একসময় তারা সমালোচনা করেছিল। আওয়ামী লীগ সরকার এলডিসি থেকে উত্তরণকে “স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় অর্জন” বলে ঘোষণা করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বলেছিলেন, রপ্তানি সুবিধা হারানোর ঝুঁকি মোকাবেলায় তিন বছরের সমাধান ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করা হয়েছে। ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের পরও ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা ভোগ করতে পারবে।

আজ নিউইয়র্কে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসও একই কণ্ঠে সহায়তা চেয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, উন্নত বাজারে বাণিজ্য ছাড় বা শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার প্রত্যাহারের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। ডব্লিউটিও মহাপরিচালকও সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

অন্তর্বর্তী সরকার এখন বলছে, প্রস্তুতির ঘাটতি ও অর্থনীতির দুর্বলতা বিবেচনায় এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে। কিন্তু একইসঙ্গে তারা শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা ও আন্তর্জাতিক সহায়তার পথেই হাঁটছে, যেটি আওয়ামী লীগ সরকার আগেই নিশ্চিত করেছিল।

অতএব, রাজনৈতিক বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সরকারের সিদ্ধান্তকে “ভুল” বলা হলেও বাস্তবে বর্তমান সরকার সেই নীতিকেই অনুসরণ করছে। বিরোধিতা থেকে অবস্থান পরিবর্তন করে, অর্থনৈতিক বাস্তবতার কারণে অন্তর্বর্তী ইউনুস সরকারও সেই পথেই হেঁটেছে, যা দেখিয়ে গিয়েছিল শেখ হাসিনা।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট