আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের সীমানা কামরাঙ্গীরচরের মুসলিমবাগ থেকে হাজারীবাগের রায়েরবাজার পর্যন্ত হতে পারে আরেক নতুন হাতিরঝিল।
ডেস্ক নিউজ আদালত বার্তা:২৮ মার্চ ২০২৩।
তিন বছর আগেও আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের এমন অবস্থা ছিল যে শুকনা মৌসুমে শিশু-কিশোরেরা সেখানে খেলাধুলা করত। এ পথে বর্ষার মৌসুমেও ঠিকমতো পানিপ্রবাহ ছিল না। বর্জ্য ও পলি পড়ে হয়ে গিয়েছিল মৃতপ্রায়। তবে গত এক বছরে চ্যানেলটির চেহারা অনেকটা বদলেছে। এটি যে বুড়িগঙ্গা নদীর একটা শাখা, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের অবস্থান লালবাগের ইসলামবাগ, হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর এলাকার মধ্যে। আদি চেহারায় ফিরতে থাকা চ্যানেলটিকে ঘিরে মহাপরিকল্পনা করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ইতিমধ্যে প্রায় ২২ কোটি টাকা খরচ করে সেখান থেকে বর্জ্য ও পলি অপসারণ করা হয়েছে। আরও ১৪ কোটি টাকা খরচ করে চলছে বর্জ্য অপসারণের প্রস্তুতি।
ডিএসসিসি একসময় মৃতপ্রায় হয়ে পড়া চ্যানেলটিকে হাতিরঝিলের আদলে দৃষ্টিনন্দন করে সাজাতে চায়। সে লক্ষ্য ইতিমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে।
আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের সীমানা কামরাঙ্গীরচরের মুসলিমবাগ থেকে হাজারীবাগের রায়েরবাজার পর্যন্ত। প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেলটি সচল করা গেলে লালবাগ, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি ও কামরাঙ্গীরচর এলাকার জলাবদ্ধতা দূর হবে বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কামরাঙ্গীরচরে নির্বাচনী জনসভায় আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ওই সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটির তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় চ্যানেলটি উদ্ধারের পরিকল্পনা হাতে নেয় সংস্থাটি।
এদিকে পুরোনো এই চ্যানেলকে বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে তৈরি করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সীমানা চিহ্নিত করার কাজ শেষ হয়েছে। অবৈধ স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হয়েছে। পাশাপাশি বসানো হয়েছে সীমানাখুঁটি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির মুখপাত্র ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের প্রথম আলোকে বলেন, সপ্তাহের প্রতি বুধবার দক্ষিণ সিটির বিভিন্ন উন্নয়নকাজ পরিদর্শন করেন মেয়র। চ্যানেলটির উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
শেখ ফজলে নূর তাপসের বরাত দিয়ে এই মুখপাত্র বলেন, ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে আদি বুড়িগঙ্গা শুধু ভরাট হয়েছে। এই প্রথম বাস্তবে আদি বুড়িগঙ্গা পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে। যদিও কাজটা অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও দুরূহ।
নদীর দুই পাশ দিয়ে হাঁটার পথ, সাইকেল চালানোর পথ, গণপরিসরের ব্যবস্থা করে সেখানে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে; যাতে ঢাকাবাসীর পাশাপাশি পর্যটকেরা স্থানটি পরিদর্শন করতে আসেন।
মো. আবু নাছের, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মুখপাত্র
চ্যানেলটি ঘিরে মেয়রের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে নিজস্ব অর্থায়নে বুড়িগঙ্গায় বর্জ্য অপসারণের কাজ চলছে। চ্যানেলটিকে দৃষ্টিনন্দন করে সাজাতে ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে। এর মূল লক্ষ্য, নদীটা সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধার ও স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা; যাতে আর কেউ এটা দখল করতে না পারে। আর কেউ ময়লা-বর্জ্য ফেলার সুযোগ না পায়।
নদীর দুই পাশ দিয়ে হাঁটার পথ, সাইকেল চালানোর পথ, গণপরিসরের ব্যবস্থা করে সেখানে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে; যাতে ঢাকাবাসীর পাশাপাশি পর্যটকেরা স্থানটি পরিদর্শন করতে আসেন।