ডিগ্রি কলেজ ১৫২ প্রভাষক-কর্মচারীর এমপিওভুক্তির আবেদনের সুযোগ দিতে নির্দেশ : হাইকোর্ট
এডভোকেট মোহাম্মদ এনামুল হক, আদালত বার্তাঃ৬ ডিসেম্বর ২০২২।
এমপিওভুক্তির আবেদনের জন্য ন্যূনতম দুটি বিভাগ থাকার শর্তারোপ করে দেশের বিভিন্ন ডিগ্রি কলেজে কর্মরত ১৫২ জন প্রভাষক-কর্মচারীর এমপিওভুক্তির অনলাইন আবেদনের সুযোগ প্রদানে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ্ মিয়া বলেন, আজকের এই রায়ের ফলে রীটকারীগণ ন্যায়বিচার পেয়েছেন এবং তাদের এমপিওভুক্তির আবেদনের সুযোগ ও এমপিওভুক্তির পথ সুগম হলো।
দেশের বিভিন্ন জেলার ডিগ্রি কলেজের ১৫২ জন প্রভাষক ও কর্মচারীর দায়ের করা রিটের ওপর জারি করা রুলের বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি শেষে রোববার (৪ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি কাশেফা হোসেন এবং বিচারপতি কাজী জিনাত হক-এর সমন্বয় গঠিত বেঞ্চ এই এমপিওভুক্তির আবেদনের সুযোগ দানের নির্দেশনা দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন।
আদালতে আজ রীটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ্ মিয়া এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নূর উস সাদিক।
রীটকারীদের পক্ষের সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ) বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিগ্রি কলেজের (পাস) কোর্সে কর্মরত প্রভাষক ও কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির আবেদনের ক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ প্রণনয় করে উক্ত নীতিমালার পরিশিষ্ট খ এর পাদটীকা অনুসারে স্নাতক (পাস) কলেজ এমপিওভুক্তির জন্য ন্যূনতম ২টি বিভাগ চলমান থাকতে হবে।
যেহেতু রিটকারীদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে একটি বিভাগ চালু রয়েছে তাই তারা দীর্ঘদিন কর্মরত থাকার পরও এমপিওভুক্তির আবেদন করতে পারেননি। অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া আরও বলেন, এমপিওভুক্তির আবেদন করা রিটকারীদের আইনগত অধিকার কিন্তু উপরোক্ত শর্তের কারণে তারা উক্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেস, যা মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন।
যদিও পূর্বের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৩ ও ২০১৮ এ উক্ত নিষেধাজ্ঞা ছিল না এবং জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৩ ও ২০১৮ অনুসারে ডিগ্রি কলেজের কর্মরত রিটকারীদের ন্যায় প্রভাষক ও কর্মচাচীরা এমপিও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে সব সুযোগসুবিধা পেয়ে আসছেন। কিন্তু রিটকারীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। তাই আবেদনকারীরা উপরোক্ত নির্দেশনা চেয়ে রিট পিটিশনটি দায়ের করেন। পূর্বের জাীরকৃত রুলের পূর্ণঙ্গ শুনানি শেষে ডিসেম্বরে রিট পিটিশনটি নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট এ রায় দেন।
রিটকারীরা হলেন- মো. নুর আলম ছিদ্দিক, মৃণাল কান্তি রায়, মো. হারুন অর রশিদ, মো. এমরানুল হাসান, মো. ওসমান গনি মো. জিলহক, মো. মনিরুল ইসলাম, সুকদেব সরকার ও মো. খলিলুর রহমানসহ বিভিন্ন জেলার ২৯১ জন।
এর আগে ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর এমপিওভুক্তির আবেদনের জন্য ন্যূনতম দুটি বিভাগ থাকার শর্তারোপ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির আবেদনের সুযোগ কেন দেওয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ), মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ (ডিজি) সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন জেলার ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও কর্মচারীর করা পৃথক তিনটি রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
আদালতে রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট বিপুল বাগমার।