নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষা দিয়েই মূল্যায়নের চিন্তা
এডভোকেট মোহাম্মদ এনামুল হক আদালত বার্তাঃ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
২০২৩ সাল থেকে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। ধাপে ধাপে এই কারিকুলাম বাস্তবায়ন করবে সরকার। মুখস্থ নির্ভরতা কমানো ও হাতে কলমে শিক্ষা প্রণয়নের উদ্দেশ্য নিয়ে চালু হয় নতুন শিক্ষাক্রম। তবে এই নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা অভিভাবক মহলে। এই পদ্ধতি বাতিলেও দাবি তোলেন অনেকে। তবে নতুন কারিকুলাম চালু রেখেই পরীক্ষা পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার ইঙ্গিত মিলছে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে।
শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন অ্যাপ নৈপুণ্যতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
নতুন শিক্ষামন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী দায়িত্ব নেয়ার পর বলেছিলেন প্রয়োজনে শিক্ষা কারিকুলামে পরিবর্তন আনা হবে। সার্বিক বিষয়ে তিনি গত কয়েক দিন ধরে সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় করছেন। মতামত নিচ্ছেন। সপ্তাহখানেক আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে একটি মূল্যায়ন পদ্ধতি ও কারিকুলাম সংক্রান্ত একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন চলছে।কমিটিতে জাতীয় এনসিটিবি প্রতিনিধি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ও দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধিরা সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তাবৃন্দ এবং মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ।
মূল্যায়ন কমিটির মতামতের উপর ভিত্তি করে পরীক্ষা আংশিক বা পুরো নম্বরে করা হতে পারে। পরীক্ষা না থাকায় অনেক অভিভাবকই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এখন নতুন করে কারিকুলাম ঠিক রেখে ৩০ থেকে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে গত ১লা ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এনসিটিবি এবং শিক্ষা কারিকুলামের সঙ্গে যুক্ত সংস্থা ও ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক করেন। থিংক গ্লোবালি, অ্যাক্ট লোকালি অর্থাৎ চিন্তায় বৈশ্বিক কিন্তু দেশের সীমাবদ্ধ সম্পদ, অবকাঠামোর মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে- এমন চিন্তা থেকে এই কারিকুলাম ডিজাইন করা হয়েছে তা জানানো হয়। এরপর শিক্ষামন্ত্রী নতুন কারিকুলামে কীভাবে এসেছে রেফারেন্স দেশগুলো বাস্তবায়ন পদ্ধতি ও পরীক্ষার বিস্তারিত প্রতিবেদন আকারে তলব করেন। এরই প্রেক্ষিতে এনসিটিবি তা মন্ত্রণালয়কে সরবরাহও করেছে।
শিক্ষার্থীদের শিখনকালীন ও সামষ্টিক মূল্যায়নের তথ্য সংরক্ষণ ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিপোর্ট কার্ড প্রস্তুতের জন্য নৈপুণ্য অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এই অ্যাপের ওয়েব ভার্সন ব্যবহার সংক্রান্ত গাইডলাইন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। এনসিটিবি বলছে, নতুন শিক্ষাক্রমে যদি কোনো পরিবর্তন, সংশোধন বা পরিমার্জন আসে তা বছরের যেকোনো সময় বাস্তবায়ন করা সম্ভব। কারণ কোনো বইই এখনো পূর্ণাঙ্গ নয়। সবই পরীক্ষামূলক সংস্করণ। গত বছরের এপ্রিল মাসে ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বইয়ের ৪ শতাধিক সংশোধনী পাঠায় বোর্ড। সারা দেশে কমপক্ষে ৩ শতাধিক স্কুলে সশরীরে উপস্থিত থেকে উপযোগিতা যাচাইয়ের কাজ করা হবে। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তিকের স্কুলের তথ্য যুক্ত করা হবে।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, একেবারে বাতিল না করে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা রাখার দাবি উঠেছে সব মহল থেকে। এসব বিষয় পর্যালোচনা করতেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশের উপর নির্ভর করছে বিষয়টি।