1. multicare.net@gmail.com : আদালত বার্তা :
রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:১২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বই পড়া এবং বই না পড়া মানুষের মধ্যে পার্থক্য মানুষের প্রতি আল্লাহর অসন্তুষ্টির ৫ কারণ একা ভ্রমণে ১০ ভুল এড়িয়ে চলুন ছাত্র-তরুণের নেতৃত্বে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল, নাম ও প্রতীক প্রস্তাবের আমন্ত্রণ জীবনে কখনো কাউকে পরোয়া করো না, নিজের যোগ্যতায় নিজে এগিয়ে যাও। বদলে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা দুই সংজ্ঞা থেকেই বাদ যাচ্ছে শেখ মুজিবের নাম। সরাসরি যুদ্ধে অংশ না নিলে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি থাকবে না। পরোক্ষভাবে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁরা পাবেন সহযোগীর স্বীকৃতি। টাইম ম্যানেজমেন্ট অতি জরুরি বই মেলায়  আগত দর্শনার্থীদের একমাত্র ভরসা মেট্রোরেল আজও টিকে আছে পরিবারের যেসব ধরন ভিসা পরিষেবায় নতুন পদ্ধতি চালু করছে মার্কিন দূতাবাস

স্বাধীনতা দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: শনিবার, ২৬ মার্চ, ২০২২
  • ৭৪৬ বার পড়া হয়েছে

আজ ২৬ মার্চ, ৫১তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে শুরু হয় আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম। পরাধীনতার শিকল ভাঙার অদম্য আকাক্সক্ষায় এ দিন প্রাণপণ সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলার মুক্তিকামী বীরেরা। নানা আয়োজনে এবার দিবসটি উদযাপন করা হবে।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সেই সাথে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি। দিবসটি উপলক্ষে সারা দেশে বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’ ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে মুক্তিপাগল সচেতন শ্রেণী পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে ইঙ্গিত লাভ করে। এরপর সমস্যা সমাধানে ১৬ মার্চ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সাথে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ আলোচনা ব্যর্থতার দিকে গড়াতে থাকলে অনেকেই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন। মার্চের সেই উত্তাল দিনগুলোতে এভাবে প্রস্তুত হতে থাকে যুদ্ধের ক্ষেত্র।

২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে করাচির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন ইয়াহিয়া খান। রাত ১১টায় তিনি করাচি পৌঁছার খবর ঢাকায় পাঠানোর পরপরই শুরু হয় গণহত্যা অভিযান। রাজপথে নেমে আসে ট্যাংক এবং সশস্ত্র সৈন্য। পূর্ব পাকিস্তানের ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলন চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য শুরু হয় ইতিহাসের নির্মম হত্যাযজ্ঞ। ২৫ মার্চে গণহত্যা পরিচালনার সময় পুলিশ, তৎকালীন ইপিআর এবং বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টে বাঙালি সৈনিক ও অফিসাররা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। পরদিন থেকে শুরু হয় স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ। যে যার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে চূড়ান্ত সেই যুদ্ধে। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী লড়াই-সংগ্রাম আর ত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় মহান বিজয়। এ দেশের মুক্তিকামী মানুষ পায় লাল-সবুজের পতাকাখচিত একটি স্বাধীন ভূখণ্ড।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গতকাল এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ দেশবাসীসহ প্রবাসী বাংলাদেশীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেছেন, স্বাধীনতার কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনে জনমুখী ও টেকসই উন্নয়ন, সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রপতি বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশে পরিণত হোক, মহান স্বাধীনতা দিবসে এটাই আমার প্রত্যাশা।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেয়া গতকাল এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে এবং প্রবাসে বসবাসকারী সব বাংলাদেশী নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি, আমরা দেশে উন্নয়নের যে গতিধারা সৃষ্টি করেছি তা অব্যাহত থাকলে বিশ্বমানচিত্রে বাংলাদেশ অচিরেই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সৌভাগ্যবান যে, ২০২০-২১ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অর্থাৎ মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী যুগপৎভাবে বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করেছি। স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসের এই মাহেন্দ্রক্ষণে সব বাংলাদেশীকে ভেদাভেদ ভুলে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে লালন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, আত্মপ্রত্যয়ী ও আত্মমর্যাদাশীল ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অংশগ্রহণ করার আহŸান জানাই।

কর্মসূচি : অনেক প্রাপ্তি নিয়ে এবার স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হবে। গত বছর এমন একটি সময়ে দিবসটি উদযাপিত হয়েছিল, যখন বাংলাদেশসহ চার দিকে ছিল বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের থাবা। বর্তমানে মহামারী অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে তাই এবার স্বতঃস্ফূর্ততা থাকবে বেশি। মহান স্বাধীনতা দিবসের এই দিনে একইসাথে মুজিববর্ষের কর্মসূচিও উদযাপিত হওয়ায় কর্মসূচিতে ভিন্নমাত্রা যুক্ত হয়েছে। মহান স্বাধীনতা দিবস পালন উপলক্ষে এবার জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ শনিবার প্রত্যুষে রাজধানীতে তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যরা শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

দিনটি সরকারি ছুটির দিন। সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা এবং ঢাকা শহরে সহজে দৃশ্যমান উঁচু ভবনগুলোতে বৃহদাকারের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন বাহিনীর বাদক দল বাদ্য বাজাবে।

দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এ দিন সংবাদপত্র বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এ উপলক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেশের শান্তি সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হয়েছে।

সরকারি দল আওয়ামী লীগ দিবসটি উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছেÑ আজ সূর্যোদয় ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারা দেশে সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৬টায় সীমিত পরিসরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন (রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে), সকাল ৭টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ, বেলা ১১টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের একটি প্রতিনিধিদল টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়াও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এ ছাড়াও মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন রোববার বিকেল ৩টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভাপতিত্ব করবেন। গতকাল এক বিবৃতিতে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে মুজিববর্ষের সমাপ্তিতে যথাযথ মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট