যে সকল আইন দ্বারা সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়-১
এডভোকেট মোহাম্মদ এনামুল হক, সম্পাদক, আদালত বার্তাঃ২৮ অক্টোবর ২০২২।
ইংরেজি ‘জার্নাল’ এবং ‘ইজম’ থেকে জার্নালিজম বা সাংবাদিকতার উৎপত্তি। ‘জার্নাল’ শব্দের অর্থ কোনো কিছু প্রকাশ করা এবং ‘ইজম’ শব্দের অর্থ অনুশীলন বা চর্চা করা। সে হিসেবে কোনো কিছু জনসমক্ষে প্রকাশ করার জন্য যে চর্চা বা অনুশীলন তাকে সাংবাদিকতা বলা হয়। আর যিনি সংবাদপত্রের জন্য সংবাদ সংগ্রহ করেন ও লিখেন তিনিই সাংবাদিক।
মার্কিন সাংবাদিক আর ডি ব্লুমেনফ্রেল্ডের মতে,‘যিনি সংবাদ সংগ্রহ করে তা প্রকাশ উপযোগী করেন এবং সংবাদ সংক্রান্ত কাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনিই সাংবাদিক।’ অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশ একটি অপরাধপ্রবণ দেশ এবং যথাযথ প্রতিবেদন সংবাদপত্রে প্রকাশের কারণে অপরাধ প্রবণতা কমে বলে ধারণা করা হয়। পাশাপাশি উন্নয়নমূলক ও মানবিক কাজের মাধ্যমে ভালো কাজে মানুষকে উৎসাহী করা হয়।
তবুও সাংবাদিকতাকে একটি ঝুকিপূর্ণ পেশা ও সংবাদপত্রকে একটি ঝুঁকিবহুল শিল্পের নাম বলা হয়। কেননা সাংবাদিক এবং সংবাদপত্র হচ্ছে গোপনীয়তার শত্রু। যেখানেই সমাজ বিরোর্ধী দুর্নীতিবাজ স্বার্থান্বেষী অশুভ চক্রের ষড়যন্ত্র, সেখানেই সাংবাদিক তৎপর হন জানমালকে বাজি রেখে। এখানে সংবাদ কর্মী কিংবা সংবাদপত্র যাই লিখুকনা কেন তাকে চোখ, কান সজাগ রাখতে হয় পেছনের দিকে ফিরে তাকিয়ে দেখতে হয়। প্রচলিত আইনে তিনি কোন বিপদে পড়ছেন কিনা।
সাদা পোশাকে সরকারী এজেন্সী তাকে ধরে নিয়ে বিচারের সম্মুখীন করার পুর্বেই আটকাদেশ দিতে পারে কিংবা সমন ,ওয়ারেন্ট তার মাথায় ঝুলতে পারে,পত্রিকার ডিক্লারেশন কেন বন্ধ করে দেওয়া হবেনা মর্মে জরুরী শো কজ জারী করা হতে পারে। এজন্য একজন সাংবাদিক ও সংবাদপত্র সংশ্লিষ্টদের সাংবাদিকতা এবং সংবাদ বিষয়ক আইন সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকা চাই । নইলে একজনের সামান্য অসতর্কতার জন্য একটি পত্রিকার প্রতিবেদক, সম্পাদক, প্রকাশক সহ গোটা সংবাদ পরিবারই বিপদগ্রস্থ হতে পারেন।
স্বাধীনতা এমন একটি অধিকার যা কখনো দায়িত্বশীলতার সীমা অতিক্রম করতে পারেনা। তেমনি সংবাদকর্মীদের স্বাধীনতার সীমা আছে। যে সকল আইন দ্বারা সাংবাদিক, সংবাদপত্র, ছাপাখানা এবং এদের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ করে; সেগুলোকে প্রেস‘ল বা সংবাদ বিষয়ক আইন বলে।