ডেস্ক নিউজ আদালত বার্তা:১২ মার্চ ২০২৩।
সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি ভিআইপিদের (বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) আনাগোনা বেড়ে গেছে। এতে করে জেলা প্রশাসনের বাহ্যিক ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। পাশাপাশি অনেকটা হিমশিমও খেতে হচ্ছে।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল চারদিনের সফরে বৃহস্পতিবার কক্সবাজার এসেছেন। তিনি অবস্থান করছেন হিলটপ সার্কিট হাউসে।
১0ই মার্চ শুক্রবার দুদিনের সফরে আসছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। তিনি কাল বিকালে ঢাকা ফিরে যাবেন।
১১ই মার্চ শনিবার দুদিনের সফরে আসছেন বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর (সচিব পদমর্যাদা) মোমিনুর রশিদ আমিন। তিনি রোববার সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরবেন।
রোববার (১২ই মার্চ) দুদিনের সফরে আসছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব জিয়াউল হাসান। তিনি ঢাকায় ফিরে যাবেন সোমবার (১৩ই মার্চ)।
শুক্রবার দুদিনের সফরে আসছেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মদ আমিনুর রহমান। তিনি সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিব।
১৩ই মার্চ সোমবার একদিনের সফরের আসবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এমপি। তিনিও ওইদিন বনবিভাগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে সন্ধ্যায় উড়ো জাহাজযোগে ঢাকায় ফিরে যাবেন।
এ মাসের শুরুতেই গত ২ ও ৩ মার্চ দুদিন কক্সবাজার সফর করে গেছেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। ওই একই সময়ে কক্সবাজার সফরে আসেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ এহছানে এলাহী।
১লা মার্চ থেকে ৩রা মার্চ তিনদিন কক্সবাজার সফর করেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব মোঃ কক্সবাজারে আগত ভিআইপি এবং তাদের সফরসঙ্গী কর্মকর্তাদের থাকার আবাসন, খাবার, যাতায়াতের জন্য যানবাহনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর সংস্থান এবং দেখ-ভাল করতে হয় জেলা প্রশাসনকে। নিরাপত্তার বিষয়টি দেখে জেলা পুলিশ ও সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
এতো গেলো সরকারি ঊর্ধ্বতন প্রোটোকল । মাঝেমধ্যে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতারা ও সাংগঠনিক কাজে কক্সবাজার সফর করেন। ওই সব গুরুত্বপূর্ণ নেতা যদি হন মন্ত্রী, হুইপ কিংবা অন্য ভিআইপি মর্যাদার তাহলে তাদের ও যাবতীয় প্রোটোকলসহ অন্যান্য বিষয়গুলো দেখ-ভাল করতে হয় জেলা প্রশাসনকে।
জেলা প্রশাসনের নেজারত শাখার সূত্র বলছে, মন্ত্রী ও সচিব পদমর্যাদার বাইরে ও প্রায় প্রতিদিন একাধিক অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা কক্সবাজার আসেন সরকারি কাজ কিংবা ব্যক্তিগত ভ্রমনে।
তাদের আবদার ও রক্ষা করতে হয় সৌজন্যতার খাতিরে। ভিআইপিদের খাবার ও অন্যকিছুর জন্য সরকারি অর্থের বরাদ্ধ নেই। জেলা প্রশাসনের এলআর ফান্ড থেকে ওইসব ব্যয় সংস্থান করা হয়।
সচেতন নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন মহল থেকে দীর্ঘদিন এলআর ফান্ড বন্ধ করার দাবী উত্থাপিত হয়ে আসছে। কিন্তু কঠিন বাস্তবতার কারণে তা সম্ভব হয়ে ওঠছে না প্রশাসনের পক্ষে। এলআর ফান্ডের রেওয়াজ চালু হয়েছে বৃটিশ আমল থেকে এমনটি শোনা যায় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মুখ থেকে।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজারে ভিভিআইপি ও ভিআইপি এবং তাদের সংযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাপ এতো বেশি যে, জেলা শহরের বেশ কয়েকটি উন্নতমানের আবাসিক হোটেলে আগাম কক্ষ বুকিং করে রাখতে হয়।
এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দেশের মধ্যে কক্সবাজার এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা। তাই এখানে দিন দিন ভিআইপিদের আনা-গোনা বেড়েই চলেছে। মাঝেমধ্যে ভিআইপিদের আধিক্যে হিমশিম খেতে হয়।
কক্সবাজার বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেডের বিমান ও প্রাইভেট এয়ারলাইনসের প্রায় ৩০টি ফ্লাইট ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে প্রতিদিন চলাচল করছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমন বেড়েছে ১০ গুণ।