
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের দিন ঠিক করতে জোর পেয়েছে ৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার।
নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তাঃ১৬ নভেম্বর ২০২৫
ত্রয়োদশ সংসদ জাতীয় নির্বাচনের ট্রেন চলতে শুরু করেছে। এর মধ্যে বিএনপি প্রাথমিক প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে জামায়াত ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন। গণসংহতি আন্দোলন, গণফোরামও তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। নির্বাচন সামনে রেখে ১০১১টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অন্যান্য দলগুলোর মধ্যেও শুরু হয়েছে ব্যাপক তোড়জোড়।
এদিকে তফসিল ঘোষণা আর ভোটগ্রহণের তারিখ চূড়ান্তে এখন চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। দিনক্ষণ নির্দিষ্ট না হলেও আগামী বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ নির্ধারণ প্রায় নিশ্চিত বলে জানা গেছে। নির্বাচন কমিশন ও প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণের জন্য ৩, ৫ ও ৭ ফেব্রুয়ারিসহ তিনটি তারিখ পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে ৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার এবং ৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার হওয়ায় এ দুটি দিনে হওয়ার সম্ভাবনা নেই। জোর পেয়েছে ৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার। এ ক্ষেত্রে আমলে নেওয়া হয়েছে আবহাওয়ার প্রতিবেদনও।
সূত্রটি জানায়, নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্তে মঙ্গলবার দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছে প্রধান নির্বাচন কমিশন। সেখানে সংলাপ থেকে প্রাপ্ত দলগুলোর মতামত ও ভোটের প্রস্তুতি তুলে ধরার কথা রয়েছে।
ওই সাক্ষাতেই মূলত চূড়ান্ত হতে পারে নির্বাচনের তারিখ। এ ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণার রীতি অনুযায়ী আগামী ৭ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে তফসিল ঘোষণা করতে পারেন প্রধান নির্বাচন কমিশন।
জানা যায়, প্রাথমিকভাবে ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন ঘিরে প্রস্তুতি ছিল সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু রমজানের আগেই নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার পরিকল্পনায় আরও এক সপ্তাহ এগিয়ে আনা হচ্ছে নির্বাচন। জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল। তবে সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আগে ৩ তারিখ ঘোষণার বিষয়ে একটা আলোচনা হয়েছিল। তবে ইসি তার সুবিধামতো সময়ের জন্য দুয়েক দিন এদিক-সেদিক করতে পারে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রেও মিলেছে একই ধরনের আভাস। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক কমিশনার বলেন, সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো তফসিলের তারিখ ঘোষণার জন্য চাপ দিচ্ছে। তারা তফসিলের সুনির্দিষ্ট তারিখ জানতে চায়। তাই আমরা রোববার কমিশন বসে তফসিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। এরপর দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষে গণমাধ্যমকে তফসিলের বিষয় ইঙ্গিত দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। কবে তফসিল হতে পারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্পষ্টভাবে কিছু না বললেও তিনি জানান, আগামী ৫ থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করা হবে।
এদিকে নির্বাচন সামনে রেখে প্রায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এখন চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনি সংলাপ। গত বৃহস্পতিবার দুই ধাপে ১২টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি। আজ আরও ১২টি দলের সঙ্গে সংলাপ করবে কমিশন। এরপর সোমবার আরও ১২টি দলের সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি।
নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে মোট ভোটার ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জন। তবে এই তালিকা চূড়ান্ত নয়। ১৮ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ হতে পারে। গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ইসির হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুযায়ী পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার ৩৮২ এবং নারী ভোটার ৬ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ জন। আর তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার (হিজড়া) ১ হাজার ২৩০ জন। সূত্র: সময়ের আলো