শঙ্কার কথা জানালেন হাস, মোমেনের আশ্বাস।
প্রতিবেদকের নাম:
-
প্রকাশিত:
বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২২
-
৬১৯
বার পড়া হয়েছে
- শঙ্কার কথা জানালেন হাস, মোমেনের আশ্বাস।
ডেস্ক নিউজ আদালত বার্তাঃ১৪ ডিসেম্বর ২০২২।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। ছবি কোলাজ: দৈনিক বাংলা
কূটনৈতিক প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
ঢাকায় বিএনপির নিখোঁজ এক নেতার বাসায় যাওয়ার পর নিরাপত্তা ‘অনিশ্চয়তায়’ পড়েছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দেখা করে নিজের ‘নিরাপত্তা শঙ্কার’ কথা জানিয়েছেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদূতকে অধিকতর নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন মন্ত্রী।
বুধবার সকালে রাজধানীর শাহীনবাগে ৯ বছর আগে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় যান মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। মার্কিন দূত যাচ্ছেন- এমন খবরে সেখানে জড়ো হন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। ‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারেও বেশকিছু মানুষ সেখানে অবস্থান নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ওই বাসায় ঢোকার সময় প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেন। এ সময় বাসার ফটকের বাইরে হট্টগোল শুরু হয়। প্রায় আধা ঘণ্টা ওই বাসায় অবস্থান শেষে পুলিশি পাহারায় চলে যান রাষ্ট্রদূত হাস।
সেখান থেকে সরাসরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন মার্কিন দূত। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত জরুরিভিত্তিতে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললেন যে, উনি এক বাসায় গিয়েছিলেন, তখন অনেক লোক সেখানে ছিল। তারা উনাকে কিছু একটা বলতে চাচ্ছে এবং উনার সিকিউরিটির লোকেরা বলেছেন যে, আপনি তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যান। কারণ ওরা আপনার গাড়ি ব্লক করে দেবে।’
‘সেই নিরাপত্তা অনিশ্চয়তাতে তিনি তখন তাড়াতাড়ি চলে গেছেন। এতে তিনি খুবই অসন্তুষ্ট হয়েছেন। আমি রাষ্ট্রদূতকে বললাম, আপনার নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব আমাদের। আপনার ওপর কিংবা আপনার লোকের ওপর কেউ আক্রমণ করেছে? তিনি বললেন, না। বললেন, উনার গাড়িতে হয়ত দাগ লেগেছে, তবে ওটা শিওর না।
রাষ্ট্রদূতের আরও নিরাপত্তা লাগলে দেয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তবে আপনি ওখানে গেছেন এই খবরটা কে প্রকাশ-প্রচার করল? আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছুই জানি না, আপনি আমাদের জানান নাই।’
বিএনপির নিখোঁজ নেতার বাসায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত যাবেন- এই তথ্য কে ফাঁস করেছে, সেটি বের করতে রাষ্ট্রদূতকে পরামর্শ দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, তার যাওয়ার তথ্য কে ফাঁস করলো জানতে চাইলে মার্কিন দূত জবাব দিতে পারেননি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আপনার নিরাপত্তা আমরা দেব। আপনি বরং বের করুন আপনার যাওয়ার তথ্য কেমন করে প্রচার হলো? আপনার লোকই তো করতে পারে- এটা আমরা বলেছি। তিনি (হাস) একটু দুশ্চিন্তায় আছেন।’
রাষ্ট্রদূত কোনো অনুষ্ঠানে গেলে, সেখানে গণমাধ্যমকে আটকে রাখা যাবে না বলে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি বললাম, আমি মিডিয়াকে আটকাতে পারব না। আমাদের দেশের মিডিয়া খুব স্বোচ্চার। আপনারা যদিও বলেন ওদের ফ্রিডম অব স্পিচ নেই। আমি তাদের কোথাও বাধা দিতে পারব না।’
মন্ত্রী বলেন, সেখানে জড়ো হওয়া মানুষদের তিনি আটকাতে পারেন না। তিনি নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের দূরে রাখতে পারেন। বাংলাদেশে সবার বাকস্বাধীনতা রয়েছে।
বিদেশি গণমাধ্যম, ইউটিউবসহ বিভিন্ন জায়গায় ভিডিও কনটেন্টে নানা রকম অভিযাগ আনা হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনেক বানোয়াট, বানানো তথ্য বিভিন্ন মিডিয়াতে আসে, ইউটিউবে আসে। আর বিদেশিরাও ওইসব দেখে ওখান থেকে রিপোর্ট করে ফেলে। লজ্জার বিষয় ইউএনএর মতো একটা সংস্থা যাকে অত্যন্ত বিশ্বাস করি তারাও একবার আমাদের কাছে একটা খবর দিল যে, বাংলাদেশ থেকে ৭৬ জন লোক নিখোঁজ হয়ে গেছে। আমরা বললাম নাম দাও, যখন ৭৬ জনের লিস্ট দিল তখন দেখা যায় ১০ জনকে পাওয়া গেল, তারা দিব্যি শান্তিতে আছে। আর ইন্ডিয়ানরা বললো তাদের দেশে দুই নাগরিক, আমাদের লিস্টে ঢুকিয়ে রেখেছে। তারা খারাপ করেছিল, জেলে ছিল এখন বাড়িতে থাকে। ইউএনএর মতো একটি সম্ভ্রান্ত সংস্থা তারা যখন যারা অপকর্ম করে তাদের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আমাদের প্রশ্ন করে তখন আমার দুঃখ লাগে যে ইউএন এর পয়সা আমরা দেই, যাচাই-বাছাই না করেই কেমন করে এভাবে অভিযোগ করে।’
‘যারা এ ধরনের কাজটা করেছে ওদের চাকরি চলে যাওয়া উচিত। কারণ তাদের দায়দায়িত্ব, অনেকে অনেক কিছু বলবে, তাদের দায়দায়িত্ব যাচাই বাছাই করে তারপর তথ্যটা আমাদের কাছে পেশ করবে। আমরা যদি কোনো অসুবিধা থাকে ওই অনুযায়ী, আমরা খুব রিসেপটিং, কারেক্টেড কিছু বললে আমরা ওই অনুযায়ী চেষ্টা করব যাতে উত্তরণ করতে পারি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বলেন, ‘দুনিয়ার সব দেশেই কিছু লোক গুম হয়, কিছু লোক হারিয়ে যায়, দ্যাটস হোয়াই বাংলাদেশ, আমেরিকায়তো আরও বেশি লোক গুম হয়, আমেরিকার তথ্যানুযায়ী বছরে এক হাজারের বেশি লোকরে আমেরিকান পুলিশ মেরে ফেলে এবং উইদাউট এনি প্রোসেস অব ল। কত লোক মরে যায়, স্কুলে যায় মেরে ফেলে। দুনিয়ার সব দেশেই কম বেশি, আমরা চাই না আমাদের দেশে একটা লোক মারা যাক। বিনা বিচারে একটা লোক মারা যাক চাই না। দুর্ঘটনা হলে আমরা তার বিচার করি। সিকিউরিটির কেউ যদি মারে অবশ্যই তার অ্যাকাউন্টিবিলি আমরা দেখি, বাধ্য কোনো উপায় নেই। ইউটিউবে তারা বকবক করেছে, তবে আমাদের দেশের মানুষ খুব সজ্ঞান’
আরো সংবাদ পড়ুন