1. multicare.net@gmail.com : আদালত বার্তা :
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন

জমি হারাবেন নাকি বাঁচাবেন? যে কাগজ না থাকলে হারাতে পারেন মালিকানা

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

জমি হারাবেন নাকি বাঁচাবেন? যে কাগজ না থাকলে হারাতে পারেন মালিকানা

নিউজ ডেস্ক আদালত বার্তাঃ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

ভূমি সংক্রান্ত মামলা, দখল-বিরোধ কিংবা পারিবারিক বিবাদ এসব সমস্যার বড় কারণ প্রায়ই হয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাব। নতুন ভূমি আইনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, জমির মালিকানা, দখল ও হস্তান্তরের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কাগজপত্র না থাকলে ভবিষ্যতে জমি হারাতে হতে পারে। তাই এখন থেকেই সচেতন থেকে এসব দলিল সঠিকভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা জরুরী

জমির দলিল ও বায়া দলিল
জমি কেনাবেচার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি হলো দলিল। রেজিস্ট্রার অফিসে সম্পাদিত এবং সাক্ষীর স্বাক্ষর ও রেজিস্ট্রারের সিলমোহরযুক্ত দলিল ছাড়া মালিকানা প্রমাণ সম্ভব নয়। পাশাপাশি দলিলের পূর্ববর্তী নথিগুলো, যেগুলোকে বায়া দলিল বলা হয়, সেগুলোও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনে জেলা রেজিস্ট্রার অফিস থেকে দলিলের সত্যায়িত কপি সংগ্রহ করা যায়।

খতিয়ান ও পর্চা
জমির মালিকানা নির্ধারণে খতিয়ান বা পর্চার গুরুত্ব অপরিসীম। জরিপ শেষে ভূমি অফিস থেকে যে নথি প্রদান করা হয়, সেটিই খতিয়ান। মালিক নিজে সংগ্রহ করলে তা হয় পর্চা। মূল খতিয়ান ভূমি অফিসে সংরক্ষিত থাকে এবং এটি জমির সঠিক রেকর্ড বহন করে।
 

দাখিলা বা খাজনার রশিদ
জমির খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানের পর তহসিল অফিস থেকে যে রশিদ পাওয়া যায়, সেটিই দাখিলা। জমি বিক্রির সময় এটি দাখিল করা বাধ্যতামূলক। দাখিলা বর্তমান দখলদার মালিককে বৈধ প্রমাণ করে। এমনকি জমি খাজনামুক্ত হলেও, দুই টাকা প্রদান করে দাখিলা সংগ্রহ করা সম্ভব।
 
ওয়ারিশ সনদ ও সাকসেসন সার্টিফিকেট
উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিকানা পেতে হলে ওয়ারিশ সনদ অপরিহার্য। এটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র বা সিটি করপোরেশনের মেয়রের স্বাক্ষরে ইস্যু হয়। আর আদালতের মাধ্যমে ইস্যুকৃত উত্তরাধিকার প্রমাণপত্রকে বলা হয় সাকসেসন সার্টিফিকেট, যা আইনিভাবে আরও শক্তিশালী নথি।
 
মিউটেশন বা নামজারি
জমির মালিকানা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে মিউটেশন বা নামজারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে জমির নামজারি করতে হয়, যা জমির নতুন মালিককে সরকারি রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করে। এটি ছাড়া মালিকানা প্রমাণ কার্যত অসম্ভব।
আদালতের রায় ও ডিক্রি
ভূমি নিয়ে মামলা-মোকদ্দমার পর আদালতের প্রদত্ত রায় বা ডিক্রিই হলো চূড়ান্ত প্রমাণ। জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকলে আদালতের এ রায়কেই মালিকানা নির্ধারণের প্রধান ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়।
 
মৌজা ম্যাপ ও বাস্তব খণ্ডচিত্র
জমির অবস্থান ও সীমানা সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য ধারণা পেতে মৌজা ম্যাপ অপরিহার্য। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে মৌজা ম্যাপ সংগ্রহ করা যায়। এতে জমির ভৌগোলিক অবস্থান ও সীমারেখা পরিষ্কারভাবে জানা যায়।

জমির দখল ও ব্যবহার
জমির বৈধ দখল প্রমাণে দাখিলাই প্রধান নথি। তবে আইন বলছে, জোরপূর্বক দখল নয়, বরং বৈধ মালিকানার ভিত্তিতে জমি ব্যবহারকেই স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

নতুন ভূমি আইনের বাস্তবতায় নিজের জমির মালিকানা, দখল ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে এই নয়টি গুরুত্বপূর্ণ নথি অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে। অসচেতনতা বা অবহেলার কারণে শুধু নিজের নয়, প্রজন্মের সম্পদও হারিয়ে যেতে পারে। তাই এখনই সময় দলিল, পর্চা, দাখিলা থেকে শুরু করে সব নথি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করার।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট